top of page
Search
  • Writer's pictureProf Manotosh Chakravarty

A Classic Tragedy of The Commons in Economics

মহাকাশে মানবজাতির ফেলে আসা আবর্জনা(মহাকাশ যানের ধ্বংসাবশেষ) - এটি কি অর্থনীতির “সর্বজনের দুঃখ” ভরা চিরন্তন বিয়োগান্ত নাটক (A Classic Tragedy of the Commons) ?


-মনতোষ চক্রবর্তী।




ব্যক্তি এবং যৌথ এই দুই পর্যায়ের মধ্যে যৌক্তিকতার দ্বন্দ্বকে তুলে ধরা বা হাইলাইট করার ধারণা হলো ট্র্যাজেডি অব কমন্স। এই ট্র্যাজেডি অব কমন্স ধারণাটি আমেরিকান বাস্তুবিজ্ঞানী গ্যাররেট হার্ডিন, দ্বারা জনপ্রিয় হয়েছিল, যিনি ব্যবহার করেছিলেন উপমা, যা ছিল একটি সাধারণ(সর্বজনের ব্যবহারযোগ্য) মাঠে পশুপালকদের পশু চরানোর বিষয়কে কেন্দ্র করে । যখন চারণ ক্ষেত্রটিতে তার ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি পশু না থাকে , তখন পশুপালকরা কিছু সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তাদের পশু চরাতে পারে। তবে, যুক্তিশীল পশুপালক সেই মাঠে আরো বেশি সংখ্যক পশুসম্পদ যোগ করতে চাইবে, কারণ তাতে তার লাভ বাড়বে। যৌক্তিকভাবে কেউ কেউ এতে সাময়িক লাভবান হলেও সম্মিলিতভাবে পশু যোগ করার সুবিধা বেশিদিন থাকবে না । কারণ সবাই যখন বেশি বেশি করে পশু মাঠে সংযুক্ত করবে, তখন তৃণভূমির তৃণ উজাড় হয়ে যাবে। কাজেই সাধারণের জন্য উন্মুক্ত মাঠের ট্র্যাজেডি হল যে, শেষ পর্যন্ত সেই মাঠ তৃণশূন্য হলে পশুপালনের অতিরিক্ত খরচের কারণে কোনো পশুপালকই আর মাঠে চরাতে পারবে না। বিশ্বের বিভিন্ন সম্পদের ক্ষেত্রে এরকম মারাত্মক পরিণতি নিয়ে এই দৃশ্যকল্পটি অসংখ্য ক্ষেত্রে দেখা যায়। যেমন (১) শহর-গ্রামের ব্যক্তি মালিকানাহীন /সরকারি মালিকানাধীন পুকুর এর জল ব্যবহার (২) খাল -বিল-নদী-সাগরের মৎস্যক্ষেত্র, (৩) বন -জঙ্গল ইত্যাদি ক্ষেত্রে ট্র্যাজেডি অব কমন্স ধারণাটি প্রকটভাবে পরিলক্ষিত হয়। মহাকাশ অভিযানে বহু রকেট সহ নানা কৃত্রিম উপগ্রহ নিয়মিত উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে এবং বেশ কিছু আবার মহাকাশেই থেকে যাচ্ছে আবর্জনা হিসাবে। মানব জাতির মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রেও অর্থনীতির ট্র্যাজেডি অব কমন্স কিভাবে ভাবিয়ে তুলেছে, এ বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-এর The Wall Street Journal-র ১৬ই নভেম্বর, ২০২১-এ মতামত কলামে প্রকাশিত অভিমতটি নিচে অনুবাদপূর্বক উল্লেখ করা হলো।

A Space Treaty to Stop the Sky From Falling

[Debris in orbit poses dangers to human life and well-being.]

By Alexander William Salter


আকাশ-পতন রোধে (আকাশ ভেঙ্গে পড়া থামানোর জন্য ) একটি মহাকাশ চুক্তি

[কক্ষপথে পড়ে থাকা ধ্বংসাবশেষ, মানুষের জীবন এবং সুস্থতার জন্য বিপদ ডেকে আনে।]

- আলেকজান্ডার উইলিয়াম সালটার

16 নভেম্বর, 2021




লো-আর্থ কক্ষপথটি আবর্জনায় পূর্ণ, এবং সোমবার রাশিয়া যে অ্যান্টি-স্যাটেলাইট পরীক্ষা পরিচালনা করেছে , তা এ জিনিসগুলোকে আরও খারাপ করে তুলেছে। ইউএস স্পেস কমান্ডের মতে, এটি আরো কয়েক হাজার ধ্বংসাবশেষের টুকরো টুকরো অংশ তৈরি করেছে। মস্কোর এ কর্মকাণ্ড সমস্ত মানবতার জন্য মহাকাশ ব্যবহারের ক্ষেত্র হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে । তবে রাশিয়াই একমাত্র দেশ নয়, যে উপগ্রহ-বিরোধী অস্ত্র চালনা করে ।1985 সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , 2007 সালে চীন এবং 2019 সালে ভারত এমন পরীক্ষা পরিচালনা করেছিল। মহাকাশ যুগের শুরু থেকেই কক্ষপথে ফেলে আসা ধ্বংসাবশেষ পরবর্তীতে একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন প্রথম ফেলে আসা টুকরোটি ছিল 1957 সালের স্পুটনিক-১ থেকে ‘রকেটের বডি’। এক একটি মার্বেলের আকারের অন্তত অর্ধ মিলিয়ন ফেলে আসা টুকরো মহাকাশে রয়ে গিয়েছে এবং আরও কয়েক মিলিয়ন টুকরো রয়েছে, যা ট্র্যাক(চিহ্নিত) করার জন্য খুব ছোট। যেহেতু কক্ষপথে থাকা বস্তুগুলো ঘন্টায় 17,500 মাইল বেগে ভ্রমণ করে, তাই এমনকি ছোট ছোট টুকরোগুলোর প্রভাবেও মহাকাশের সম্পদ ধ্বংস হতে পারে।



মহাকাশের আবর্জনা মানুষের জীবন এবং সুস্থতার জন্য বিপদ ডেকে আনে। এছাড়াও সোমবার, রাশিয়ার এই পরীক্ষা থেকে বা অন্য কোনও উৎস থেকে সৃষ্ট/ থেকে যাওয়া ধ্বংসাবশেষের কারণে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনেঅবস্থানরত মহাকাশচারীদের জন্য কিন্তু জরুরী প্রোটোকল প্রয়োগ করতে হয়েছিল, যা আমরা অবশ্য নিশ্চিত হতে পারি না। স্বর্গীয় সংঘর্ষগুলো(Celestial collisions) একটি ‘দুষ্ট বৃত্ত’(vicious circle) তৈরি করে: “আরও ধ্বংসাবশেষ আরও সংঘর্ষের সৃষ্টি করে এবং তার কারণে আরও ধ্বংসাবশেষ সৃষ্টি হয়”(More debris causes more collisions causes more debris) । এই ফিডব্যাক লুপ, যাকে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন ‘কেসলার সিনড্রোম’, তা সমস্ত কক্ষপথের ক্রিয়াকলাপকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়।

আরেকটি বড় উদ্বেগ হল- এসবের দ্বারা অর্থনৈতিক ক্ষতি। মরগান স্ট্যানলি প্রাক্কলন করেছেন যে, যে মহাকাশ অর্থনীতি, যা বর্তমানে বছরে প্রায় $400 বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের ডলার মূল্যের সমান , 2040 সাল নাগাদ তা $1 ট্রিলিয়ন হতে পারে। সেই অর্থনৈতিক কার্যকলাপের বেশিরভাগই, বিশেষ করে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট নির্ভর করে লো-আর্থ অরবিটাল ইন্টেগ্রিটির (অখণ্ডতার) উপর । যদি আকাশের আবর্জনা, স্যাটেলাইট অপারেশনকে খুব ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে তবে বেসরকারী খাত কিন্তু কক্ষপথে মূল্যবান হার্ডওয়্যার স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় বড় অগ্রিম খরচ বহন করবে না।




সময় এসেছে মহাকাশযান প্রেরণকারী দেশগুলোর ফেলে আসা ধ্বংসাবশেষ নিয়ে গুরুত্ব দেওয়ার। আমরা ‘প্রতিকূল অভিনেতাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ’(discipline hostile actors) করার আগে, আমাদেরকে একটি ‘সূক্ষ্ম শত্রুর সাথে কুস্তি’(wrestle with a subtler foe) করতে হবে: তা হলো খারাপ প্রণোদনা(bad incentives)। ধ্বংসাবশেষের এ বিস্তার হলো অর্থনীতির চিরন্তন সাধারণের দুঃখ/ বিয়োগান্ত নাটক বা একটি ক্লাসিক ট্র্যাজেডি(a classic tragedy of the commons)। নির্দিষ্ট ‘অরবিটাল স্লট’ রেশন/বরাদ্দ করা যেতে পারে, কিন্তু কক্ষপথকে কারো নিজের মালিকানাধীন হতে দেয়া যাবে না । সরকারগুলো তাদের পরিত্যক্ত ধ্বংসাবশেষ যা অন্যদের জন্য খরচ/ ব্যয় ভার তৈরী করছে, তার সামান্যই বহন করতে প্রস্তুত । এর অনুমানযোগ্য ফলাফল হলো : আরো আরো বেশি আবর্জনা।



যদিও 1967 সালের ‘আউটার স্পেস চুক্তি’ সরকারগুলোকে তাদের এখতিয়ারকে মহাকাশে প্রসারিত করতে বাধা দেয়, তারা মহাকাশে রাখা বস্তুর উপর কর্তৃত্ব বজায় রাখে - তাদের ধ্বংস করার অধিকার সহ। কক্ষপথকে ব্যবহার উপযোগী রাখতে হলে আন্তর্জাতিক আইন পরিবর্তন করতে হবে।


আমেরিকা, চীন এবং রাশিয়া সহ মহাকাশযান প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি সুস্পষ্ট চুক্তি ছাড়া আর কোন পথ নেই। একজনকে আঘাত করা, কোন ছোট একটি কাজ নয়। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা রয়েছে: তা হলো মহাকাশ সক্ষমতায় তার প্রশ্নাতীত নেতৃত্ব। অন্য দেশগুলো যাতে স্পেস কে “জাঙ্ক ইয়ার্ড”(আবর্জনার আঙিনা) বানানো থেকে বিরত রাখে, এ বিষয়ে কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির সেই অবস্থানটিকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহার করা উচিত।

মহাকাশ আইনের একটি মৌলিক/ ভিত্তিমূলক নীতি হল যে, স্পেসকে "সকল দেশের দ্বারা অন্বেষণ এবং ব্যবহারের জন্য মুক্ত রাখা হবে।" অবশ্য সেই নীতির কোন কার্যকরী শক্তি নেই, যদি দুর্বৃত্ত জাতিগুলো কোনো পরিণতির তোয়াক্কা না করেই কক্ষপথে আবর্জনা ফেলতে থাকে । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত মহাকাশে ফেলে আসা ধ্বংসাবশেষ প্রশমিত করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া। এর অর্থ হল ‘অ্যান্টি-স্যাটেলাইট অস্ত্র’ এর পরীক্ষা রোধে দায়িত্ব ভেবে যুক্তরাষ্ট্রকে তার নেতৃত্ব নিতে হবে ।


মিঃ সালটার হলেন টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটির রলস কলেজ অফ বিজনেসের অর্থনীতির সহযোগী অধ্যাপক, টিটিইউ-এর ফ্রি মার্কেট ইনস্টিটিউটের একজন গবেষণা ফেলো এবং সাউন্ড মানি প্রকল্পের একজন সিনিয়র ফেলো।


উৎস ও কৃতজ্ঞতা:

Alexander William Salter’ WSJ , Opinion/Commentary, 16 নভেম্বর, 2021

93 views0 comments

Recent Posts

See All

Comments


bottom of page