top of page
Search
  • Writer's pictureProf Manotosh Chakravarty

Adam Smith's Definition of Economics

মৌলিক ব্যষ্টিক অর্থনীতি- পাঠ : ১.৪

(Basic Microeconomics -Lesson: 1.4)


অ্যাডাম স্মিথ প্রদত্ত সম্পদ কেন্দ্রিক অর্থনীতির সংজ্ঞা

(Definition of economics in the context of wealth)


- প্রফেসর মনতোষ চক্রবর্তী









সম্পদ প্রেক্ষিতে অর্থনীতির সংজ্ঞার অন্তর্নিহিত বিষয়াদি / বৈশিষ্ট্য

(১) অ্যাডাম স্মিথ এর সংজ্ঞায় সম্পদ প্রয়ােগ, সম্পদ থেকে প্রাপ্তি প্রসঙ্গ স্থান পায়। কাজেই অর্থনীতি হল সম্পদ সমীক্ষার শাস্ত্র।

(২) বস্তুগত দ্রব্য কেবল সম্পদ হিসাবে বিবেচ্য। অবস্তুগত বিষয়, সম্পদ হিসাবে গণ্য হয় না।

(৩) সম্পদ সংগ্রহের কারণ, সম্পদ সংরক্ষণ প্রবণতা এ সংজ্ঞার অন্তর্নিহিত বৈশিষ্ট্য।

(৪) সম্পদ সংগ্রহের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন এর বিষয়, এ সজ্ঞায় প্রতিফলিত হয়।

(৫) সম্পদ প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন করা সম্ভব।

(৬) ব্যক্তি স্বার্থের দ্বারা প্রনোদিত হয়ে সম্পদ সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি পরিচালিত হয় ।




সম্পদ প্রেক্ষিতে অর্থনীতির সংজ্ঞার সুবিধা/ গুনাবলী কি কি?

১। অ্যাডাম স্মিথ প্রদত্ত সংজ্ঞার মাধ্যমে রাজনৈতিক অর্থনীতি (পলিটিক্যাল ইকোনমি)-তে অর্থনীতিকে রাজনীতি থেকে পৃথক করে, অর্থনীতিকে একটি স্বাধীন বিষয় হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়।


২। এ সংজ্ঞার মাধ্যমে সম্পদ বৃদ্ধির ধারণা ও সম্পদ বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করা যায়।


৩। ব্যক্তিস্বার্থ ভিত্তিক কর্মপ্রচেষ্টার দ্বারা প্রয়ােজনীয় অভাবগুলােকে সর্বোচ্চ মাত্রায় পূরণ করার দিক নির্দেশনা প্রদান করে এ সংজ্ঞা।



অ্যাডাম স্মিথের সম্পদ সংক্রান্ত সংজ্ঞার সমালােচনা/ ত্রুটি বিচ্যুতি/ সীমাবদ্ধতা:


(১) সম্পদই মুখ্য নয়: সম্পদ অর্জন একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে না। সম্পদকে একটা মাধ্যম(means) বলা হলেও তা একমাত্র উদ্দেশ্য (end) হিসাবে গণ্য করা হয় না। মানুষের সুখ ও কল্যাণ কেবল সম্পদকে ঘিরেই পরিচালিত হয় না ।


(২) নীতি বিচ্যুতির আশংকা: সম্পদ অর্জনের আশায় মানুষের নীতি বিচ্যুতির আশংকা থাকে।


(৩) সংকীর্ণতা: অর্থ, প্রতিপত্তি, স্বার্থপরতার জন্য এ সংজ্ঞা প্রেক্ষিতে অর্থনীতিকে ‘রুটি ও বন্দুক এর বিজ্ঞান’ (bread-and-butter science) হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। কার্লাইল এবং রুসকিন/ রাসকিন অর্থনীতিকে 'ম্যামনের গসপেল’ (‘Gos­pel of Mammon) এবং ‘অস্বস্তিকর/ অন্ধকারময় বিজ্ঞান’ (Dismal science) বলে অভিহিত করেছিলেন।

(৪) অপূর্ণতা : বস্তুগত দ্রব্য স্থান পেলেও অবস্তুগত বিষয়াদি এ সংজ্ঞা থেকে বাদ যায়। কিন্তু অবস্তুগত

বিষয়াদি বিবেচনা ছাড়া অর্থনীতি পূর্ণাঙ্গ হতে পারে না।

(৫) স্বল্পতা ও পছন্দকে অবজ্ঞা: সম্পদের স্বল্পতা ও পছন্দের সমস্যাকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। অথচ অর্থনীতিতে তা অতি গুরুত্বপূর্ণ।


মন্তব্য:

অ্যাডাম স্মিথের সংজ্ঞার গুরুত্ব হ্রাস পেয়েছে । অর্থনীতির এ সম্পদভিত্তিক সংজ্ঞা ঊনবিংশ শতাব্দির শেষভাগে অনেকটা ম্লান হয়ে পরে । তখন মার্শাল যে সংজ্ঞাটি প্রদান করেন, তা অনেকের কাছেই গ্রহণযােগ্য হয়ে ওঠে। সম্পদের সংজ্ঞাকে সংকীর্ণ দৃষ্টিতে চিন্তা করায় স্মিথের সম্পদ ভিত্তিক সংজ্ঞা গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছে ।


স্মিথের সম্পদ ভিত্তিক সংজ্ঞা কি সত্যি গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছে ?

আলফ্রেড মার্শাল হলেন একজন অগ্রগামী নব্যধ্রুপদী অর্থনীতিবিদ। তিনি অর্থনীতির কল্যাণ প্রেক্ষিত সংজ্ঞা দেওয়ার প্রয়াস পান। এই সংজ্ঞাটি অর্থনীতি অধ্যয়নের পরিধি বাড়িয়ে তুলেছে, যেখানে শুধু সম্পদ নয়, বরং সম্পদ ও মানবতাকে একত্র করে অধ্যয়নের উপর জোর দেয়া হয়। মার্শাল সম্পদ বিবেচনাকে বাদ দিতে বলেননি। মার্শালের সংজ্ঞার মধ্যেই স্মিথের সংজ্ঞা সংগুপ্ত যাচ্ছে, কাজেই স্মিথের সংজ্ঞা অর্থাৎ সম্পদভিত্তিক অর্থনীতির সংজ্ঞা একেবারে হারায়নি।



অ্যাডাম স্মিথের সংজ্ঞার সূত্র ধরে অর্থনীতির সম্পদকেন্দ্রিক সংজ্ঞা আরও যাঁরা প্রদান করেছেন:


N. W. Senior," the subject treated by political economy is not happiness but wealth."

J. S. Mill ," Economics is the practical science of production and distribution of wealth"

J. B. Say, "Political economy makes known the nature of wealth"



অ্যাডাম স্মিথ এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়

(Adam Smith:1723-1790)

১৭২৩ সালে স্কটল্যান্ডে অ্যাডাম স্মিথের জন্ম। তিনি ‘বাজার অর্থনীতি’ (Market economy) এবং 'অদৃশ্য হাত’ (invisible hand)' ধারণার প্রবক্তা । ১৭৭৬ সালে স্মিথের 'An Inquiry into the Nature and Causes of the Wealth of Nations' (সংক্ষেপে “The Wealth of Nations') গ্রন্থটি প্রকাশের পর থেকে অর্থনীতির চিন্তাধারাগুলাে বিন্যস্ত হতে শুরু করে। তাই অ্যাডাম স্মিথকে সুবিন্যস্ত অর্থনীতির জনক হিসাবে অভিহিত করা হয়। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগাে কলেজে ১৭৫১ সালে তিনি Moral Philosophy - এর প্রভাষক হিসাবে যােগদান করেন। ১৭৭৮ সালে অধ্যাপনা ছেড়ে স্কটিশ শুল্ক বিভাগে কমিশনার পদে যােগ দেন। ১৭৯০ সালে মৃত্যু অব্দি তিনি সেই পদেই বহাল ছিলেন।


অ্যাডাম স্মিথের অর্থনৈতিক ভাবনা/ অবদানসমূহ( Adam Smith’s economic thinking / contributions ) :

(১) সম্পদ(Wealth) এর উৎস হিসাবে শ্রম (labour) সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ।

(২) শ্রম বিভাগ (Division of labour)- অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।

(৩) অর্থনীতির অদৃশ্য হাত (The invisible hand in economics) হলো বাজার অর্থনীতি(market economy)-র ভিত্তি।

(৪) মূল্যের আপাত অসামঞ্জস্য (paradox of value) অর্থনীতির মূল্য তত্ত্বের নতুন দিক উন্মোচন করে।

(৫) বণিকতন্ত্রবাদের/ বণিকবাদের সম্পদ বৃদ্ধির ধারণার ত্রুটি বিচ্যুতি নির্দেশ।

(৫) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ভিত্তি হিসাবে পরম সুবিধা তত্ত্ব এর ব্যাখ্যা প্রদান।

(৬) ব্যক্তিস্বাতন্ত্র নীতি (ব্যক্তিতাবাদ)- অ্যাডাম স্মিথের ক্লাসিক্যাল অর্থনৈতিক ভাবনার ভিত্তি, যেখানে ভূমিবাদ তথা কুয়েজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ।

(৭) রাষ্ট্র বা সরকারের নিষ্ক্রিয়তা অকাম্য।

(৮) কর সংগ্রহের নীতি/ কানুন(cannons of taxation) সরকারি অর্থ ব্যবস্থার অন্যতম ভিত্তি।

(৯) স্বাভাবিক সমাজ ও “অর্থনৈতিক মানুষ” (Natural Society and Economic Man) বিষয়ক ভাবনা চিন্তা।



অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর:

১। সুবিন্যস্ত অর্থনীতির জনক কে?

উ: অ্যাডাম স্মিথ।

২। অ্যাডাম স্মিথ কোন দেশের নাগরিক?

উ: স্কটল্যান্ড(ব্রিটেন)।

৩। অ্যাডাম স্মিথের বিখ্যাত একটি গ্রন্থের নাম কি?

উ: An Inquiry into the Nature and Causes of the Wealth of Nations (সংক্ষেপে 'The Wealth of Nations')

৪। স্মিথের The Wealth of Nations গ্রন্থটি কত সালে প্রকাশ পায়?

উ: ১৭৭৬ সালে প্রকাশ পায়।

৫। অ্যাডাম স্মিথের অবদান কোন কোন ধারণার প্রেক্ষিতে বিবেচ্য ?

উ: বাজার অর্থনীতি(Market economy) , অদৃশ্য হাত (Invisible hand) , শ্রম বিভাগ(Division of labour ), বাণিজ্য বা বিনিময়ের পরম/চরম সুবিধা তত্ত্ব (Absolute advantage theory of trade ) ইত্যাদি।

৬। সম্পদ প্রেক্ষিতে অর্থনীতির সংজ্ঞা কে প্রদান করেছেন?

উ: অ্যাডাম স্মিথ।

অর্থনীতিকে 'ম্যামনের গসপেল’ (Gos­pel of Mammon) ও ‘অস্বস্তিকর/ অন্ধকারময় বিজ্ঞান’ (Dismal science) হিসাবে কারা অভিহিত করেছেন?

উ: রাসকিন (Ruskin ) ও কার্লাইল (Carlyle )



দ্রষ্টব্য: অর্থনীতি কি প্রকৃতই 'ম্যামনের গসপেল’ (Gos­pel of Mammon) ও ‘অস্বস্তিকর/ অন্ধকারময় বিজ্ঞান’ (Dismal science) ?

-এ বিষয়ে জানা যাবে পরের আলোচনায়।


উৎস









ধন্যবাদ অন্তে -

প্রফেসর মনতোষ চক্রবর্তী






2,505 views0 comments

Recent Posts

See All

Comments


bottom of page