top of page
Search
  • Writer's pictureProf Manotosh Chakravarty

Basic macroeconomics- problem of double/multiple counting in national income estimation




প্রশ্ন ২।[2019] জাতীয় আয়ের দ্বৈত গণনা সমস্যা বলতে কি বোঝানো হয় ?(What is meant by the problem of double counting in national income estimation ?)

- মনতোষ চক্রবর্তী

উ: জাতীয় আয়ের দ্বৈত গণনা সমস্যা- এর অর্থ অযৌক্তিক গণনার কারণে জাতীয় আয় (বা জিডিপি) হিসাবের ক্ষেত্রে দ্বৈত /দ্বিগুণ/ একাধিক গণনার ত্রুটি দেখা দেয় । নির্দিষ্ট বছরে একটি দেশের উৎপাদিত পণ্যগুলোর মূল্য একাধিক বার গণনা করার ত্রুটিপূর্ণ অনুশীলনকে বোঝাতে এই ‘দ্বৈত গণনার সমস্যা’ কথাটি অর্থনীতিতে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত: উৎপাদন, বিভিন্ন বিশেষায়িত চ্যানেলে (অর্থাৎ বিভিন্ন পর্যায়ে) পরিচালিত হয়। তাই চূড়ান্ত একটি পণ্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন মধ্যবর্তী/ অন্তর্বর্তী পণ্য ব্যবহৃত হয়। সেখানে চূড়ান্ত পণ্যের মূল্য তো আছেই , তার ওপর যদি আবার বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যবহৃত মধ্যবর্তী পণ্যের মূল্যও এর সাথে যুক্ত হতে থাকে , তবে সেখানে জাতীয় আয় হিসাবের ক্ষেত্রে দ্বৈত গণনার/ বহু গণনার ত্রুটি ঘটবে।


দ্বৈত গণনার অর্থ- একই পণ্যের মূল্য (বা ব্যয়) একাধিকবার গণনা বা হিসাব করা।


কিভাবে এ সমস্যা দেখা দেয় ? জাতীয় আয়ের গণনার আউটপুট পদ্ধতি বা চূড়ান্ত পণ্যের মূল্য পদ্ধতি অনুসারে ( মূল্য সংযোজনীয় পদ্ধতির/ ভ্যালু এডেড মেথড এর বিকল্প পদ্ধতি হিসাবে ) এক বছরের মধ্যে একটি দেশে উৎপাদিত কেবল চূড়ান্ত পণ্য এবং পরিষেবার মূল্য গণনা করতে হবে। অন্যভাবে বলা যায় -সেখানে অন্তর্বর্তী পণ্যের মূল্য, যা চূড়ান্ত পণ্যগুলোতে প্রবেশ করে (যেমন, বই ছাপাতে ব্যবহৃত কাগজ, পোশাকগুলোতে ব্যবহৃত কাঁচা তুলা, রুটি তৈরিতে ব্যবহৃত গম ইত্যাদি) তাদের হিসাব বিবেচনায় নেওয়া উচিত হবে না । কিন্তু প্রকৃত পরিস্থিতিতে দেখা যায় যে, চূড়ান্ত সামগ্রীর মূল্য বিবেচনার সময়, মধ্যবর্তী সামগ্রীর মূল্যও অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়তে পারে। কারণ প্রত্যেক উৎপাদক যে পণ্যটিকে তিনি বিক্রয় করেন, সেটি মধ্যবর্তী বা চূড়ান্ত যেভাবেই ব্যবহৃত হোক না কেন, তাকে তিনি চূড়ান্ত পণ্য হিসাবেই বিবেচনা (বিক্রয়) করেন। উদাহরণস্বরূপ, বাইসাইকেল এর মতো চূড়ান্ত সামগ্রীর মূল্য বিবেচনার সময়, এই সাইকেলগুলো তৈরিতে ব্যবহৃত টায়ার, টিউব, ফ্রেম, বেল (ঘন্টি), লাইট ইত্যাদির (মধ্যবর্তী পণ্যগুলোর) মূল্যও অজান্তেই সাইকেলে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। আবার সেগুলোর পৃথক পৃথক ভাবে ( টায়ার, টিউব, ফ্রেম, বেল , লাইট) মূল্য জাতীয় আয় হিসাবের মধ্যে চলে আসার সুযোগ থাকে। কাজেই কিছু নির্দিষ্ট আইটেম (অন্তর্বর্তী পণ্যের মূল্য) একাধিকবার গণনায় এসে পড়তে পারে। আর তাতে জাতীয় আয় এর হিসাবে অতিরঞ্জন / অতি মূল্যায়ন ঘটার আশঙ্কা থাকে। এভাবে একই পণ্যের মূল্য একাধিকবার গণনা করার ফলে উদ্ভুত সমস্যাকে দ্বৈত গণনা বা বহু গণনার (ডাবল/ মাল্টিপল কাউন্টিংয়ের) সমস্যা বলা হয় ।

এটি উদাহরণের সাহায্যে আরও ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। সুবিধার্থে এবং বোঝার জন্য ধরে নেওয়া যাক যে, কোনও অর্থনীতিতে পোশাক তৈরির ক্ষেত্রে কেবল চারটি ফার্ম নিযুক্ত রয়েছে । ১ নং ফার্ম (তুলা উৎপাদক) কাঁচা তুলা উৎপাদন (তৈরি) করে (অবাস্তব জেনেও ধরে নেয়া হলো যে এটি কোনও মধ্যবর্তী ইনপুট ব্যবহার করে না) এবং ১ নং ফার্ম ২ নং ফার্মের নিকট 100,000 টাকায় সেই তুলা বিক্রি করে । ২ নং ফার্ম (সুতা উৎপাদক) তুলাকে সুতায় রূপান্তরিত করে এবং ৩ নং ফার্ম (বস্ত্র উৎপাদক) এর নিকট 150,000 টাকায় তা বিক্রি করে। ৩ নং ফার্ম তা দিয়ে কাপড় তৈরি করে এবং ৪ নং ফার্মের (তৈরী পোশাক উৎপাদক) নিকট 250,000 টাকায় বিক্রি করে। ৪ নং ফার্ম তৈরী পোশাক উৎপাদন করে এবং চূড়ান্ত গ্রাহকদের কাছে 275,000 টাকায় তা বিক্রি করে। এ সমস্ত লেনদেন বা মোট আউটপুটের মোট মূল্য হলো 775,000 টাকা (=100,000 + 150,000 + 250,000 +275,000), যেখানে কাঁচা তুলা চারবার, সুতা তিনবার এবং কাপড় দু’বার গণনা করা হয়েছে। অথচ, চূড়ান্ত পণ্য (পোশাক) এর মূল্য যা অর্থনীতিতে উৎপাদিত হয়েছে, তা হলো 275,000 টাকা। সুতরাং, জাতীয় আয় গণনা করার সময়, আমরা যদি 775,000 টাকা হিসাবে ধরি , অথচ প্রকৃত অবস্থায় যা হওয়ার কথা , তা হলো 275,000 টাকা। এক্ষেত্রে দ্বৈত গণনা বা বহু গণনার (ডাবল/ মাল্টিপল কাউন্টিংয়ের) সমস্যা ঘটেছে, সেটি উপলব্ধি করা যায়।

[সংশ্লিষ্ট রূপরেখা(schematic) ভিত্তিক চিত্রটি এখানে উল্লেখ করতে পারো।]






বিকল্প উত্তর দ্বৈত/দ্বিগুণ গণনার সমস্যাটি হ'ল পণ্য ও পরিষেবাদির মূল্য একাধিকবার গণনায় অন্তর্ভুক্ত করার সমস্যা। এটি উৎপাদিত পণ্য এবং পরিষেবার মূল্যকে অতিরঞ্জিত/ অতি মূল্যায়িত করে। দ্বিগুণ গণনা মানে একাধিকবার নির্দিষ্ট আইটেমের বিবেচনা করা যা জাতীয় আয়ের পরিমাণকে বাড়িয়ে তোলে। চূড়ান্ত পণ্য পদ্ধতির মাধ্যমে জাতীয় আয়ের গণনার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত পণ্য এবং পরিষেবার বাজার মূল্য বিবেচনা করা হয় । চূড়ান্ত পণ্য পদ্ধতির মাধ্যমে জাতীয় আয়ের গণনার সময় মধ্যবর্তী পণ্য এবং পরিষেবাদির মান হিসাবের অন্তর্ভুক্তযোগ্য নয়। যদি মধ্যবর্তী পণ্য এবং পরিষেবার মূল্য চূড়ান্ত উৎপন্ন পদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তবে তা দ্বৈত গণনার সমস্যা সৃষ্টি করে । দ্বিগুণ গণনা মানে একাধিকবার নির্দিষ্ট আইটেমের বিবেচনা করা, যা জাতীয় আয়ের পরিমাণকে বাড়িয়ে তোলে। দ্বিগুণ গণনার সমস্যায় মধ্যবর্তী পণ্যকে একাধিকবার জাতীয় আয়ের অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনা বোঝায়।

জাতীয় আয় হিসাব করতে এক বছরে উৎপাদিত সমস্ত পণ্য এবং পরিষেবাদির কেবল একবারই হিসাব করতে হবে। যদি কোনও পণ্য দু'বার গণনা করা হয়, তবে তাকে ডাবল কাউন্টিং বলে। যদি কোনও পণ্য দু'বারের বেশি গণনা করা হয়, তবে তা হবে একাধিক গণনা(বারংবার গণনা বা মাল্টিপল কাউন্টিং )।

কোনো পণ্য যখন আরও কিছু রূপান্তরিত পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, এমন ক্ষেত্রে এ সমস্যা দেখা দেয়। উদাহরণস্বরূপ, গম যখন আটা এবং রুটি তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়, তখন আমরা যদি গম, ময়দা এবং রুটির মূল্য গ্রহণ করি এবং সেগুলোকে হিসাবে যুক্ত করি তবে গমের মূল্য একাধিকবার গণনায় চলে আসবে । ফলে জাতীয় আয় প্রকৃত অবস্থার চেয়ে বেশি প্রদর্শিত হবে।

এভাবে দ্বিগুণ/ বারংবার গণনার সমস্যা জাতীয় আয় হিসাবের সময় দেখা দিতে পারে।

[উল্লেখ্য(Note): জাতীয় আয়ের অ্যাকাউন্টিংয়ে কেবল চূড়ান্ত পণ্য এবং পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। তবে চূড়ান্ত পণ্য ও পরিষেবা এবং মধ্যবর্তী পণ্য ও পরিষেবার মধ্যে পার্থক্য করাও খুব কঠিন। দ্বৈত গণনার সমস্যা দেখা দেয় -যখন কোনও পণ্যের আর্থিক মূল্য অজ্ঞানতাবশতঃ বিভিন্ন সময়ে গণনা করা হয় এবং এর ফলে জাতীয় আয়ের হিসাব অতি-হিসাবে পরিণত হয় । কখনও একই পণ্য চূড়ান্ত পণ্য হিসাবে, আবার কখনও মধ্যবর্তী পণ্য হিসাবে গণনা করা হতে পারে। কৃষকের দ্বারা উৎপাদিত ধান / চাল ভোগের (খাওয়ার) ক্ষেত্রে চূড়ান্ত পণ্য হিসাবে বিবেচিত হয় এবং যদি মিলার-এর কাছে হিসাব চাওয়া হয় , তবে তা মধ্যবর্তী পণ্য হিসাবে গণ্য হয়। এভাবে জাতীয় আয় হিসাবের সময় কিছু না কিছু দ্বৈত সমস্যার অস্তিত্ব থেকে যায়। ]

-প্রফেসর মনতোষ চক্রবর্তী https://www.manoconomics.com/ Email: manotosh.chakravarty@gmail.com

393 views0 comments

Recent Posts

See All

Comentários


bottom of page