একচেটিয়া বাজারের বৈশিষ্ট্যসমূহ(characteristics of a monopoly market)
একচেটিয়া বাজার বলতে সেই বাজার কাঠামােকে বুঝায়, যেখানে একজন মাত্র বিক্রেতা ( বা উৎপাদক) থাকে , বিবেচ্য উৎপন্ন দ্রব্যের কোন নিকট পরিবর্তক (বিকল্প) থাকে না এবং অপর বিক্রেতার জন্য সেই বাজারে প্রবেশে-বাধা (barriers to market entry) থাকে।
এই সংজ্ঞা থেকে একচেটিয়া কারবারের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করা যায়।
১. দ্রব্যের একক উৎপাদনকারী বা বিক্রেতা : একচেটিয়া কারবারের ইংরেজী প্রতিশব্দ ‘মনােপলি’ (monopoly), যেখানে ‘মনাে’ অর্থ ‘একক’ এবং ‘পলি’ অর্থ ‘বিক্রেতা’। কাজেই মনােপলির শব্দগত অর্থ ‘একক বিক্রেতা’ বা ‘একক উৎপাদক’। তবে একক উৎপাদনকারী বা বিক্রেতা হিসাবে ব্যক্তিগত মালিকানা যেমন থাকতে পারে, তেমনি অংশীদারি কারবার অথবা যৌথ মালিকানায় উৎপাদন / বিক্রয় পরিচালনাও এখানে বুঝানাে হতে পারে।
২. উৎপন্ন দ্রব্যের কোন নিকট বিকল্প (close substitutes) এর অনুপস্থিতি: দ্রব্যের নিকট বিকল্প থাকলে বিভিন্ন ফার্মের মধ্যে প্রতিযােগিতাও থাকবে। তখন সেই বাজারকে আর একচেটিয়া কারবার বলা যাবে না। সব রকমের প্রতিযােগিতার অনুপস্থিতি হলাে একচেটিয়া কারবার। সুতরাং একচেটিয়া কারবারির উৎপন্ন দ্রব্যের কোন নিকট বিকল্পন এর সুযোগ নেই।
৩. শূন্য বিকল্পন স্থিতিস্থাপকতা: একচেটিয়া কারবারে নিকট বিকল্প দ্রব্য দেখা যায় না বলে এ কারবারে বিকল্পন স্থিতিস্থাপকতা শূন্য হয়।
৪. বাজার-প্রবেশে বাধা (barriers to market-entry): একচেটিয়া কারবারে একটি ফার্ম যখন উৎপাদন পরিচালনা করে, তখন অপর ফার্মকে শিল্প ক্ষেত্রে প্রবেশে নানা ভাবে বাধা দেওয়া হয়। বিভিন্ন ফার্ম যাতে শিল্প ক্ষেত্রে সহজে প্রবেশ করতে না পারে, তার জন্য বিভিন্ন অর্থনৈতিক বাধা যেমন আরােপিত হয়, তেমনি কিছু প্রাতিষ্ঠানিক বাধাও সেখানে সৃষ্টি করা হয়।
৫. নিয়ন্ত্রিত যােগান: একচেটিয়া ফার্ম কাঁচামালের উপর নিয়ন্ত্রণ আরােপ করে কোন বিশেষ পণ্যের উৎপাদনকেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। তখন প্রতিযােগিতার কোন সুযােগ থাকে না। যেমন- কানাডার একটি আন্তর্জাতিক নিকেল কোম্পানী বিশ্বের মােট নিকেলের ৯০% নিয়ন্ত্রণ করে। একইভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি কোম্পানী সারা বিশ্বে বেশির ভাগ হীরক খনির মালিকানা বজায় রাখে।
ধন্যবাদ।
প্রফেসর মনতোষ চক্রবর্তী
Email: manotosh.chakravarty@gmail.com
Comments