top of page
Search
  • Writer's pictureProf Manotosh Chakravarty

Basic Microeconomics - Lesson: 1.3

মৌলিক ব্যষ্টিক অর্থনীতি- পাঠ: (Basic Microeconomics - Lesson) : 1.3

অর্থনীতি কি "ম্যামনের গসপেল" অথবা

“অস্বস্তিকর / অন্ধকারময় /সংশয়াচ্ছন্ন বিজ্ঞান”?

[ Is economics a ‘Gospel of Mammon’ or a dismal science ?]


- প্রফেসর মনতোষ চক্রবর্তী










‘গসপেল’ শব্দের অর্থ হলো খ্রীষ্টের উপদেশাবলী/ বাইবেল এ উল্লেখিত ধর্মবাণী। অর্থ/ টাকা পয়সা, বস্তুগত সম্পদ বা এমন কিছু সত্তা, যা সম্পদ প্রাপ্তির নির্দেশনা প্রদান করে এবং লোভলালসার প্রতি আসক্তি বাড়িয়ে তোলে, এ বিষয়টি বোঝানোর জন্য বাইবেল এর নিউ টেস্টামেন্ট উল্লেখিত Mammon কথাটি ব্যবহৃত হয়। সেখানে আরো উল্লেখ আছে যে, “ঈশ্বর ও লালসার প্রতিমূর্তি হিসাবে mammon কে একসাথে সেবা করা যায় না”।


মধ্যযুগে হিব্রু চিন্তাধারায় Mammon শব্দ থেকে money এসেছে বলে ধারণা করা হয়। Vulgate Bible( চতুর্থ শতাব্দীর বাইবেল এর ল্যাটিন অনুবাদ) এ ব্যবহৃত ল্যাটিন শব্দ mammona (যার অর্থ ধন -সম্পদ/ wealth ) থেকে ইংরেজি শব্দ হিসাবে Mammon এসেছে বলে ধারণা করা হয়।




অ্যাডাম স্মিথ এবং তার অনুসারীরা অর্থনীতিকে সম্পদ বিজ্ঞান হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন। কারণ সম্পদ সংগ্রহ, সম্পদ(রূপান্তরিত সম্পদ) উৎপাদন এবং সম্পদ প্রবৃদ্ধির প্রক্রিয়াটি কেবল বিবেচ্য সংজ্ঞা প্রেক্ষিতে অর্থনীতিতে অধ্যয়ন করা হয় । অ্যাডাম স্মিথের সংজ্ঞায় মানবজীবনের বৈষয়িক দিকের উপর বিশেষ জোর দেয়া হয় ।

সম্পদের ঘাটতি অর্থনীতিকে 'ম্যামনের গসপেল' বানিয়েছে, অর্থাৎ মানুষের জীবনাকে অতি বস্তুবাদী করে তুলেছে। বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্টে ম্যামন অর্থ বিত্ত, বৈধ সম্পদ সত্তা, যা আরো আরো সম্পদের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়, এবং লোভীর সাধনার সাথে তা জড়িত হয়ে পড়ে । অর্থনীতিকে "ম্যামনের গসপেল" বলার অর্থ মূলত অর্থশাস্ত্রের সমালোচনা বা তাকে হেয় করা ।

অ্যাডাম স্মিথ কেবল অর্থের/ সম্পদের প্রতি ভালবাসা তথা জীবনের বস্তুগত দিক সম্পর্কে কেবল কথা বলেছেন, এ অভিযোগ উত্থাপিত হয় । স্মিথ- প্রদত্ত সংজ্ঞাটি যেহেতু সম্পদ সম্পর্কিত, তাই এ সংজ্ঞা অনুযায়ী অর্থনীতি মানুষকে স্বার্থপর করেছে এবং সেই সাথে মানুষের আবেগকে উপেক্ষা করেছে। ধনসম্পদ লালসা, মানবিকতা বোধকে ধ্বংস করে। সম্পদ আহরণ কাজ মুখ্য হওয়ায় , নীতি-আদর্শ সবকিছু, লোভে অচ্ছণ্ণ হয়ে পরে। কেবল খাওয়াদাওয়া (জীবন ধারণ) আর বন্দুক নিয়ে সম্পদ পাহারা দেওয়াই হলো অর্থনীতি । তাই সমালোচকরা বলতে শুরু করলেন অর্থনীতি ‘রুটি ও বন্দুকের বিজ্ঞান’ (science of bread and gun ) ছাড়া আর কিছু নয় ।

অর্থনীতি একটি 'সম্পদ বিজ্ঞান'/ ‘ধন-বিজ্ঞান’ , এ কথাটি তীব্রভাবে সমালোচিত হয়েছে। সতেরো এবং আঠারো শতকে ধর্ম ও নীতিশাস্ত্র মানুষের মনে দৃঢ়ভাবে জড়িত ছিল। ধন-সম্পদ সংগ্রহের সাথে মানুষের দুর্নিবার লোভ ও নীতিহীনতা জড়িত হয়ে পড়ে। তাই অর্থনীতিকে সম্পদ অধ্যয়ন এর বিজ্ঞান হিসাবে পাঠের বিরোধিতা করেন কেউ কেউ।






কার্লাইল এবং রুসকিন/ রাসকিন অর্থনীতিকে 'ম্যামনের গসপেল(‘Gos­pel of Mammon) এবং ‘অস্বস্তিকর / অন্ধকারময় বিজ্ঞান’ (‘dismal science’) বলে অভিহিত করেছিলেন। কার্লাইল ও রাসকিন বলেন- অর্থনীতিবিদরা জীবনের উঁচু মূল্যবোধকে অবজ্ঞা করেন এবং তাঁরা এমন নীতিনিয়ম / বিধি প্রণয়ন করতে অতি আগ্রহী ছিলেন যা মানুষ(দেশের নাগরিকদের) ও সার্বভৌমক (রাষ্ট্র/ সরকার/ রাজাধিরাজ/ সুপ্রিম লিডার ) কে ধনী থেকে ধনীতর ও ধনীতম হতে উৎসাহিত করে

কার্লাইল ও রাসকিন এর মতে অর্থনীতিতে স্মিথ কেবল অর্থ (টাকা পয়সার ) এর প্রতি ভালোবাসা/ লালসার কথা বলেছেন। কেবল বস্তুগত বাস্তবতার কথা তথা সম্পদের কথা স্মিথের সংজ্ঞায় ফুটে উঠেছে। এর দ্বারা মানুষকে স্বার্থপর করে তোলা হয়েছে। মানুষের আবেগ/অনুভূতিকে এ সংজ্ঞায় অশ্রদ্ধা করা হয়। তাই স্মিথের সংজ্ঞা অনুযায়ী অর্থনীতি হলো ম্যামনের গসপেল(gospel of mammon) এবং অন্ধকারময় / সংশয়াচ্ছন্ন বিজ্ঞান (dismal science )।

তবে এ সমালোচনাকে অনেকে অর্থনীতির প্রতি অনুদারতা, অনুচিত, অযৌক্তিক এবং পক্ষপাতদুষ্ট মনোভাব বলে মনে করেন ।

অ্যাডাম স্মিথের মতে, দেশের সম্পদ এবং এর বৃদ্ধি নির্ধারণের কারণগুলো সম্পর্কে অর্থনীতি অনুসন্ধান করে। ‘দ্য ওয়েলথ অব নেশনস’ বইতে অ্যাডাম স্মিথ উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধির নির্ধারকগুলোর কথাই বুঝিয়েছেন । অ্যাডাম স্মিথের মতে "প্রতিটি দেশের রাজনৈতিক অর্থনীতির মূল উদ্দেশ্য হ'ল সেই দেশের ধন এবং শক্তি বৃদ্ধি করা।"





অর্থনীতি ধন বিজ্ঞান/ সম্পদ বিজ্ঞান হিসাবে বিবেচিত হয়, কারণ যে উপাদানগুলো সম্পদ উত্‍পাদনের জন্য দায়ী, সেগুলির পাঠ / গবেষণা / পর্যালোচনা এখানে পরিচালিত হয় । অর্থনীতিতে আমরা এমন জ্ঞান কাঠামো অধ্যয়ন করি, যা সম্পদের সাথে সম্পর্কিত। সম্পদ / উপাদানের যথাযথ ব্যবহার ছাড়া দেশের প্রবৃদ্ধি ও ঐশ্বর্য বাড়ানো যায় না, এ কথাটি স্মিথের বইয়ের তথা স্মিথ প্রদত্ত সংজ্ঞার ভিত্ রচনা করে। অ্যাডাম স্মিথ অর্থনীতির বিষয়বস্তু হিসাবে সম্পদ উৎপাদন এবং তার প্রসারের উপর জোর দিয়েছিলেন। তবে , স্মিথের অনুসারী রিকার্ডো এসে আলোচনাকে সম্প্রসারিত করলেন। তিনি সম্পদ উৎপাদন অপেক্ষা সম্পদ বন্টন / বিতরণের ওপর গুরুত্ব দেন ।


রিকার্ডো লিখেছেন- “শ্রম, যন্ত্রপাতি এবং মূলধনের সম্মিলিত প্রয়োগের দ্বারা যেহেতু পৃথিবীর যাবতীয় উৎপাদন সংঘটিত হয়, তাই উৎপন্ন সমস্ত কিছুই মনুষ্য সম্প্রদায়ের তিনটি শ্রেণির মধ্যে বিভক্ত/বন্টিত হয় , যথা, জমির স্বত্বাধিকারী, শিল্প মালিক ( মূলধন মালিক) এবং চাষের জন্য শ্রমিক। ” তিনি আরও লিখেছেন, "সেই বন্টন নিয়ন্ত্রণকারী আইন নির্ধারণ করাই হলো রাজনৈতিক অর্থনীতির প্রধান সমস্যা”।

"অ্যাডাম স্মিথ এবং রিকার্ডো ছাড়াও অন্যান্য ক্লাসিক্যাল অর্থনীতিবিদও অর্থনীতিকে ‘সম্পদ অধ্যয়ন’ রূপে বিবেচনা করেছিলেন। ফরাসি ক্লাসিক্যাল অর্থনীতিবিদ জে বি সে’র মতে, "অর্থনীতি হ'ল বিজ্ঞান যা ধন-সম্পদকে ব্যবহার করেই পরিচালিত হয় ।" তেমনিভাবে, এফ এ ওয়াকার লিখেছেন, "রাজনৈতিক অর্থনীতি বা অর্থনীতি হলো অর্থের সাথে সম্পর্কিত জ্ঞানের নাম।”

প্ৰকৃত অবস্থায় অ্যাডাম স্মিথ, রিকার্ডো এবং মালথাসের মতো ধ্রুপদী অর্থনীতিবিদরা মানুষকে ‘ধন-সম্পদ’ বা সম্পদের উপাসনা করতে শেখান নি । তারা মূলতঃ সম্পদের নীতিগুলি ব্যাখ্যা করতে চেয়েছিলেন। কারণ সম্পদ প্রয়োজন হয় দেহগত জীবনধারণ এবং জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর জন্য। একটি জাতি প্রকৃতির কাছ থেকে সীমিত সম্পদ অর্জন করে। আর সেই প্রাকৃতিক সম্পদসহ রূপান্তরিত উৎপন্ন / সম্পদ কিভাবে জাতির মধ্যে বিতরণ ও বিনিময় হয়, এ নিয়ে অ্যাডাম স্মিথ এবং রিকার্ডো চিন্তা ভাবনা করেছিলেন। আর সেই চিন্তাভাবনা আজও অর্থনৈতিক বিজ্ঞানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । প্রয়োজনীয় সম্পদভিত্তিক পণ্য উৎপাদন, বিনিময় এবং বন্টনের নীতি-নিয়ম অধ্যয়ন করে অর্থনীতি সমাজ কল্যাণের লক্ষে অবদান রাখে। অতএব, অর্থশাস্ত্রকে ‘বিরক্তিকর’, ‘নির্বোধ’ এবং ‘গড় বিজ্ঞান’ হিসাবে বিবেচনা করা একেবারেই অনুচিত

এছাড়াও, আধুনিক অর্থনীতিতে আলোচনার সুপরিচিত বিষয় হলো আয় বা জিডিপি বৃদ্ধি , কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধি। এসবের সাথে সম্পদ উৎপাদন , বিনিময় এবং বন্টনের নিবিড় সংযোগ আছে, যার সাথে আবার অ্যাডাম স্মিথ, রিকার্ডো এবং অন্যান্য ধ্রুপদী অর্থনীতিবিদদের চিন্তাভাবনা সামঞ্জস্যপূর্ণ । প্রকৃতপক্ষে, এ বক্তব্য অ্যাডাম স্মিথ এবং রিকার্ডোর কৃতিত্বের দিকে/ পক্ষে যায়। কারণ তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন সম্পদই পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করে। অর্থনীতিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শুরু এবং ত্বরান্বিতকরণে স্মিথ-রিকার্ডোর ভাবনা খাটো করে দেখার সুযোগ নেই ।

[তবে 'ধন-সম্পদ' কথাটি ক্লাসিক্যাল অর্থনীতিবিদদের দ্বারা কিছুটা ভিন্ন ধরণের ব্যাখ্যা করা হয়েছে, অর্থাৎ 'সম্পদ' শব্দের সাথে বিভিন্ন অর্থ যুক্ত হয়েছে। তবে, অ্যাডাম স্মিথ, রিকার্ডো এবং ম্যালথাস সহ বেশিরভাগ ধ্রুপদী অর্থনীতিবিদ কেবল ‘অর্থগত’ বিষয়গুলোতেই এর অর্থ সীমিত রেখেছিলেন। তবে ধন-সম্পদের সংজ্ঞাকে ‘বৈষয়িক সম্পদ’ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে তাঁরা ‘অর্থনীতি’র সেবা ক্ষেত্রকে সংকুচিত করে ফেলেন, এটি অনস্বীকার্য । ]






অর্থনীতিতে সম্পদের দক্ষ ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরােপ করা হয়। তার দ্বারা প্রাপ্ত জাতীয় আয় ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নির্দেশক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বাস্তব সত্য হল এই যে, জাতীয় বা মাথাপিছু আয় বাড়লেও ধনী ও দরিদ্রের আয় বৈষম্য ক্রমেই বাড়ছে, উন্নত ও স্বল্পোন্নত দেশের অর্থনৈতিক ব্যবধানও ক্রমবর্ধমান। কাজেই অর্থনীতির সম্পদভিত্তিক , প্রবৃদ্ধিভিত্তিক ও বস্তুবাচক অর্থনীতির সংজ্ঞা ক্রমেই সমালােচনার সম্মুখীন হচ্ছে। আধুনিককালে মানুষের জীবন ধারণের গুণগত মান বৃদ্ধির প্রসঙ্গ অর্থনীতিতে গুরুত্ব পায়। জাতিসংঘ কর্তৃক ১৯৯০ সালে প্রবর্তিত ‘মানব উন্নয়ন সূচক' (Human Development Index/ HDI) বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত একটি ধারণা ( যার পশ্চাতে অবদান রেখেছেন প্রফেসর মাহাবুব উল হক)।



অমর্ত্য সেনের চিন্তাধারায় অর্থনীতি


নােবেল বিজয়ী (১৯৯৮) বাঙ্গালী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের মতে মাথাপিছু আয় নয়, মাথাপিছু ভােগ ব্যয়ের সক্ষমতা (capability) জীবন-মানের দিক নির্দেশনা প্রদান করে। সেই সক্ষমতার প্রকাশ ঘটে দ্রব্য ও সেবা প্রাপ্তির অধিকার তথা স্বত্বাধিকার অর্জনের (entitilement) মাধ্যমে। অমর্ত্য সেনের মতে, অর্থনীতি এমনই একটি বিষয় যা মানুষের স্বত্বাধিকার নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখে যার মাধ্যমে সক্ষমতা অর্জিত হয় এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটে, সমাজে ন্যায় ও সাম্য প্রতিষ্ঠা পায় এবং অর্থনৈতিক কল্যাণ অর্জিত হয়।


দ্রব্য ও সেবা প্রাপ্তির অধিকার প্রতিষ্ঠাই হল স্বত্বাধিকার(entitlement), যা অর্জিত হয় উৎপাদন ও বিনিময় প্রেক্ষিতে। তাই স্বত্বাধিকার মূলত: উৎপাদন স্বত্বাধিকার (production based entitilement) এবং বাণিজ্য বা বিনিময় স্বত্বাধিকার (trade based entitilement) হিসাবে বিবেচিত হয়। আর সক্ষমতা(capability) হল ব্যক্তির নির্দিষ্ট ক্রয়ক্ষমতা প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দ্রব্যের মধ্যে কার্যকরী মনােনয়নের (বা পছন্দের) স্বাধীনতা। আয় বা সম্পদ বন্টনের বৈষম্য হ্রাস করে স্বত্বাধিকার ও গণ সক্ষমতা বৃদ্ধি সম্ভব । কাজেই কেবল মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি নয়, বৈষম্য হ্রাস ও সামজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার দ্বারা সত্যিকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন সম্ভব বলে আধুনিক অর্থনীতিবিদদের বিশ্বাস ।


ডেনিস গুলেট/ গোউলেট (Denis Goulet) অর্থনীতিবিষয়ক লক্ষ্য হিসাবে মানব উন্নয়নকে বিবেচনা করতে বলেন। তিনি মানব উন্নয়নের ৩টি মৌলিক উপাদানের বিষয় উল্লেখ করেন। সেগুলাে হল:

(ক) জীবনীশক্তি বজায়/ জীবনরক্ষা প্রয়াসে পুষ্টিসাধন (life sustenance)

(খ) আত্ম মর্যাদা (self esteem)

(গ) মুক্তি/ স্বাধীনতা (freedom) ।


তাঁর মতে - অর্থনীতি এমন একটি বিষয় যার লক্ষ্য হল- জীবনশীলতার পুষ্টিসাধন(Life sustenance), আত্মমর্যাদাবােধ (Self esteem) সমুন্নতকরণ এবং অর্থনৈতিক মুক্তি বা স্বাধীনতা (Freedom) নিশিচতকরণের মাধ্যমে মানব উন্নয়ন (human development) সাধন।




(১)‘গসপেল’(Gospel) শব্দের অর্থ কি?

উ: ‘গসপেল’ শব্দের অর্থ হলো খ্রীষ্টের উপদেশাবলী/ বাইবেল এ উল্লেখিত ধর্মবাণী।


(২) Mammon কথাটি কোথায় ব্যবহৃত হয়?

উ: বাইবেল এর নিউ টেস্টামেন্ট এ Mammon কথাটি ব্যবহৃত হয়।


(৩) কোন বিষয়টি বোঝানোর জন্য Mammon কথাটি ব্যবহৃত হয়?

উ: অর্থ/ টাকা পয়সা, বস্তুগত সম্পদ বা এমন কিছু সত্তা যা সম্পদ প্রাপ্তির নির্দেশনা প্রদান করে এবং লোভলালসার প্রতি আসক্তি বাড়িয়ে তোলে, এ বিষয়টি বোঝানোর জন্য বাইবেল এর নিউ টেস্টামেন্ট উল্লেখিত Mammon কথাটি ব্যবহৃত হয়।

(৪) হিব্রু চিন্তাধারায় money শব্দটি কোথা থেকে এসেছে?

উ: মধ্যযুগে হিব্রু চিন্তাধারায় Mammon শব্দ থেকে money এসেছে বলে ধারণা করা হয়।


(৫) ইংরেজি শব্দ হিসাবে Mammon কথাটির উদ্ভব কিভাবে?

উ: Vulgate Bible( চতুর্থ শতাব্দীর বাইবেল এর ল্যাটিন অনুবাদ) এ ব্যবহৃত ল্যাটিন শব্দ mammona (যার অর্থ ধন -সম্পদ/ wealth ) থেকে ইংরেজি শব্দ হিসাবে Mammon এসেছে বলে ধারণা করা হয়।

(৬) কোন প্রেক্ষিতে অর্থনীতিকে ম্যামনের গসপেল(gospel of mammon) বলা হয় ?

উ: ম্যামনের গসপেল(gospel of mammon) কথাটি অর্থনীতিকে বিশেষতঃ আডাম স্মিথের প্রদত্ত সম্পদ প্রেক্ষিত সংজ্ঞার সমালোচনা করতে ব্যবহার করা হয়।

(৭) অর্থনীতিকে ম্যামনের গসপেল(gospel of mammon) ও অন্ধকারময় / সংশয়াচ্ছন্ন বিজ্ঞান (dismal science ) হিসাবে কে কে সমালোচনা করেন?

উ: কার্লাইল ও রাসকিন।

(৮) অর্থনীতিকে ম্যামনের গসপেল(gospel of mammon) ও অন্ধকারময় / সংশয়াচ্ছন্ন বিজ্ঞান (dismal science ) বলার অর্থ / যুক্তি / কারণ কি ?

উ: কার্লাইল ও রাসকিন এর মতে অর্থনীতিতে স্মিথ কেবল অর্থ (টাকা পয়সার ) এর প্রতি ভালোবাসা/ লালসার কথা বলেছেন। কেবল বস্তুগত বাস্তবতার কথা তথা সম্পদের কথা স্মিথের সংজ্ঞায় ফুটে উঠেছে। এর দ্বারা মানুষকে স্বার্থপর করে তোলা হয়েছে। মানুষের আবেগ/অনুভূতিকে এ সংজ্ঞায় অশ্রদ্ধা করা হয়। তাই স্মিথের সংজ্ঞা অনুযায়ী অর্থনীতি হলো ম্যামনের গসপেল(gospel of mammon) এবং অন্ধকারময় / সংশয়াচ্ছন্ন বিজ্ঞান (dismal science )।

(৯) মানব উন্নয়ন সূচক’ (Human Development Index/ HDI) কত সালে জাতিসংঘ কর্তৃক প্রবর্তিত হয়?

উ: ১৯৯০ সালে।

(১০) মানব উন্নয়ন সূচক’ (Human Development Index/ HDI) প্রণয়নে এ উপমহাদেশের কোন কোন অর্থনীতিবিদ অবদান রেখেছেন?

উ: পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মাহবুব-উল হক এবং ভারতের বাঙ্গালী (আদি বাসস্থান: বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ) নােবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর অমর্ত্য সেন।

(১১) মানব উন্নয়ন সূচকের মধ্যে ৩টি উপ সূচক কি কি?

উ: (ক) জন্মকালীন প্রত্যাশিত জীবনকাল সূচক, (খ) শিক্ষা অর্জনের স্তর সূচক ও (গ) মাথাপিছু আয় সূচক ।


(১২) স্বত্বাধিকার (entitilement) কি?

উ: দ্রব্য ও সেবার উপর অধিকার প্রতিষ্ঠাই হল স্বত্বাধিকার, যা উৎপাদন ও বিনিময় প্রেক্ষিতে অর্জিত হয়।

(১৩) সক্ষমতা (capability) কি?

উ:সক্ষমতা হল ব্যক্তির নির্দিষ্ট ক্রয়ক্ষমতার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দ্রব্যের মধ্যে কার্যকরী মনােনয়নের (পছন্দের) স্বাধীনতা।

(১৪) মানব উন্নয়নের মৌলিক ৩টি উপাদান কি কি?

উ: (ক) জীবনী শক্তি বজায়/ জীবনরক্ষা প্রয়াসে পুষ্টিসাধন (life sustenance) (খ) আত্ম মর্যাদা (self esteem) ও (গ) মুক্তি স্বাধীনতা (freedom) ।

(১৫) জীবনী শক্তি বজায়/ জীবনরক্ষা প্রয়াসে পুষ্টিসাধন (life sustenance) কি?

উ: মানুষের জীবন ধারণের জন্য প্রয়ােজনীয় খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও নূণ্যতম শিক্ষা হল জীবন রক্ষাকারি পুষ্টিসাধন।

(১৬) আত্ম মর্যাদা (self esteem) কি?

উ: সমাজে সম্মান ও মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকার দাবি।

(১৭) অর্থনৈতিক মুক্তি/ স্বাধীনতা ( economic freedom) কি?

উ: অর্থনৈতিক মুক্তি স্বাধীনতা হল অভাব/দারিদ্র্য, অজ্ঞতা ও কুসংস্কার থেকে মুক্তি। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের স্বাধীনতা, পছন্দ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা ও চিন্তার স্বাধীনতাই হল অর্থনৈতিক স্বাধীনতা।


ধন্যবাদান্তে -


মনতোষ চক্রবর্তী





কৃতজ্ঞতা: উইকিপেডিয়া (Wikipedia)


সূত্র:




198 views0 comments

Recent Posts

See All

Comments


bottom of page