top of page
Search
  • Writer's pictureProf Manotosh Chakravarty

Basic Microeconomics - Lesson - 1.5.2

মৌলিক ব্যষ্টিক অর্থনীতি- পাঠ:

(Basic Microeconomics - Lesson) : 1.5.2


অ্যাডাম স্মিথ ও দ্য ওয়েলথ অফ নেশনস

Adam Smith and The Wealth of Nations

- প্রফেসর মনতোষ চক্রবর্তী







এই পাঠ থেকে যেসব প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে:

(১) আধুনিক সুশৃংখল অর্থনীতির সূচনা ঘটে কোন গ্রন্থের মাধ্যমে, কে লিখেছেন সেটি এবং কত সালে তা প্রথম প্রকাশিত হয়?

(২)"দ্য ওয়েলথ অফ নেশনস"তে অর্থনীতির কি কি মৌলিক ধারণা স্থান পায় ?

(৩) "দ্য ওয়েলথ অফ নেশনস" এ স্মিথের কেন্দ্রীয় বার্তা (central message) কি?

(৪) ‘দ্য ওয়েলথ অব নেশনস’-কে কেন ‘ম্যাগনাম ওপাস’ (magnum opus) বলে বিবেচনা করা হয় ?

(৫) ম্যাগনাম ওপাস (magnum opus) এর উদাহরণ হিসাবে একটি চিত্রকর্ম সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পায়, সেটি কি?

------

অ্যাডাম স্মিথের সবচেয়ে প্রভাবশালী কাজের কেন্দ্রীয় বার্তা সম্পর্কে ধ্রুপদী (ক্লাসিক্যাল) এবং নিও-ক্লাসিক্যাল/ নয়া-ক্লাসিক্যাল অর্থনীতিবিদদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। স্মিথের অদৃশ্য হাতকে (The Invisible Hand ) নিও-ক্লাসিক্যাল অর্থনীতিবিদরা জোর দিয়েছিলেন । আর ক্লাসিক্যাল অর্থনীতিবিদরা বিশ্বাস করেন যে, স্মিথ তাঁর গ্রন্থের প্রথম বাক্যেই "জাতির ধন-সম্পদ" এর কথা সেখানে বলেছিলেন। স্মিথ আরো বলেন যে, ধন-সম্পদ এবং সমৃদ্ধির পশ্চাতে যা ভূমিকা রাখে, তা হলো শ্রম বিভাগ(division of labour )

স্মিথ “অদৃশ্য হাত" শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন তাঁর “জ্যোতির্বিদ্যার ইতিহাস" ( History of Astronomy) -তে । The invisible hand of Jupiter এর সূত্র ধরে অদৃশ্য হাত" কথাটি ব্যবহৃত হয়েছিল। অদৃশ্য হাত" কথাটি তাঁর নৈতিক অনুভূতির তত্ত্ব (১৭৫৯) এবং দ্য ওয়েলথ অব নেশনস (১৭৭৬) উভয় গ্রন্থেই স্থান পেয়েছে।

নাগরিক হিসাবে প্রত্যেক ব্যক্তি দেশীয় শিল্পের সমর্থনে তার মূলধন নিয়োগ করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন এবং সেই শিল্পে যাতে উৎপাদনের মান বা মূল্য সবচেয়ে বেশি হতে পারে, সেদিকে যত্নবান থাকেন । প্রত্যেক ব্যক্তি যথাসাধ্য পরিশ্রম করেন যাতে সমাজের বার্ষিক রাজস্ব/ আয় বাড়ে। তিনি সাধারণত জনস্বার্থে বা প্রচারের উদ্দেশ্যে কোনো পরিকল্পনা করেন না। তিনি সত্যিই জানেন না যে, তিনি নিজ স্বার্থে কাজ করতে গিয়ে জনস্বার্থেই কাজ করে চলেছেন । বিদেশী শিল্পের চেয়ে দেশীয় শিল্পকে তিনি অগ্রাধিকার/ সমর্থন দেন, কেবল নিজের সুরক্ষার উদ্দেশ্যে। তিনি কেবল তার নিজের লাভের ইচ্ছাতেই কাজ করেন এবং সেই কাজসহ অন্য অনেক ক্ষেত্রেই তিনি অদৃশ্য হাত দ্বারা চালিত হয়ে এগিয়ে যান, যা সাধন করা হয়তো ছিল না তাঁর উদ্দেশ্য । তাঁর নিজের আগ্রহকে অনুসরণ করে তিনি প্রায়শই সমাজকে আরও কার্যকরভাবে এগিয়ে নিতে সহায়তা করেন, অথচ সমাজকে সহায়তাকরণের কোনো পূর্ব-অভিপ্রায় তাঁর হয়তো ছিল না। যারা প্রকৃত বণিক, তাঁরা কখনও জনসাধারণের ভালোর জন্য বাণিজ্য উদ্দেশ্যে গণ-দ্রব্য এর উৎপাদন পরিচালনা করছেন , এমনটি কমই দেখা যায়। কারণ অদৃশ্য হাত তাকে সেদিকে চালিত করেনি।


কেন্দ্রীয় বার্তা হিসাবে অনেকে প্রায়শই স্মিথের এই উক্তিটি উদ্ধৃত করেন:

“অ্যাডাম স্মিথের মতে, “মাংশ বিক্রেতা(কসাই), পাণীয় বিক্রেতা(ব্রেয়ার) বা রুটি বিক্রেতা (বেকার) -এদের করুণার উপর আমাদের আহার নির্ভর করে না। নিজেদের স্বার্থেই আমাদেরকে তারা খাদ্য দ্রব্যের যােগান দেয়। তাদের কাছে মানবতার আবেদন নিয়ে আমরা উপস্থিত হই না, বরং আমাদের প্রয়ােজনের স্বার্থ, তাদেরও সুবিধা করে দেয়।”

[It is not from the benevolence of the butcher, the brewer, or the baker, that we expect our dinner, but from their regard to their own interest. We address ourselves, not to their humanity but to their self-love, and never talk to them of our own necessities but of their advantages.]

অ্যাডাম স্মিথের এ উক্তি থেকে উপলব্ধি করা সম্ভব যে, একটি অদৃশ্য হাতের ছোঁয়ায় ব্যক্তি স্বার্থের পাশাপাশি অর্থনৈতিক কাজকর্ম নিয়ন্ত্রিত হয়। তবে, থিওরি অফ মোরাল সেন্টিমেন্টস এ মানুষের আচরণের চালক হিসাবে স্বীয়-স্বার্থের বিষয়টি নিয়ে স্মিথের সংশয়ী দৃষ্টিভঙ্গি ছিল


মানুষকে যতই স্বার্থপর বলে বিবেচনা করা হোক না কেন, তার প্রকৃতিতে স্পষ্টতই কিছু নীতি সংগুপ্ত থাকে, যা তাকে অন্যের ভাগ্য বিষয়ে আগ্রহী করে তোলে এবং তাদের সুখি/ আনন্দিত দেখার বাসনাও থাকে , যদিও তা থেকে আনন্দ ব্যতীত তিনি কিছুই পান না।

স্মিথের "অদৃশ্য হাত" এর সুবিধাগুলির অর্থ হতে পারে ম্যান্ডেভিলের ধারণা অনুযায়ী "ব্যক্তি পর্যায়ের ‘পাপ’, ... জনসাধারণের ‘উপকারে’ পরিণত হতে পারে"[Mandeville’s contention that "Private Vices ... may be turned into Public Benefits"] । এটি স্মিথের বিশ্বাসকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে দেখায় যে, যখন কোনও ব্যক্তি ন্যায় বিচারের শর্তে স্বীয়-স্বার্থকে অনুসরণ করে, সে তার অজান্তে (তার ইচ্ছার বাইরে) সমাজের মঙ্গলকে উৎসাহ দেয়। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, মুক্ত বাজারে ‘স্ব-আগ্রহী প্রতিযোগিতা’ (self - interested competition ) দামকে নামিয়ে রেখে সামগ্রিকভাবে সমাজকে উপকৃত করতে পারে। আর সেখানে বিভিন্ন ধরণের পণ্য ও পরিষেবাদির জন্য উদ্দীপনা তৈরি হতে থাকে। তবুও, তিনি ব্যবসায়ীদের থেকে সাবধান থাকতে বলেছিলেন। তাদের আচরণ প্রেক্ষিতে "জনসাধারণের বিরুদ্ধে বা দাম বাড়াতে অন্য কোনও বিরোধী ষড়যন্ত্র" সম্পর্কে সবাইকে তিনি সতর্ক করেছিলেন। স্মিথ ব্যবসায়ের স্বার্থে সম্মিলিত (গ্রুপ) প্রকৃতির (যেমন অলিগোপলি) বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন, যা দলবদ্ধভাবে একচেটিয়া, সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করতে পারে। স্মিথ আরও সতর্ক করেছিলেন যে, একটি ব্যবসায়-অধ্যুষিত রাজনৈতিক ব্যবস্থা, রাজনীতি এবং আইনকে প্রভাবিত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারে। তখন সরকার হয়তো গ্রাহকদের বিরুদ্ধে ব্যবসায় এবং শিল্প ষড়যন্ত্রের এমন কিছু অনুমতি দিতে বাধ্য হবে, যা হতে পারে অকল্যাণকর । স্মিথ বলেছেন যে, উৎপাদক এবং বণিকদের আগ্রহে কোনও নতুন আইন বা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাব এলে সরকারের সর্বদা সতর্কতার সাথে ভেবে চিন্তে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। দীর্ঘ ও সতর্ক পরীক্ষা না করে কখনই তা গ্রহণ করা উচিত নয়। স্মিথ বিশ্বাস করতেন, ব্যবসায়িক ক্রিয়াকলাপগুলো সাধারণভাবে সমগ্র সমাজের জন্য উপকারী। কিন্তু স্মিথের প্রধান উদ্বেগ হলো - যখন জাতীয় রাজনৈতিক ভাবনার অনুকূলে ব্যবসায়কে সরকার থেকে বিশেষ সুরক্ষা বা সুযোগ দেওয়া হয়; তখনই তা সর্ব সাধারণের জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে ক্ষতির কারণ হতে পারে।


স্মিথ উল্লেখ করেছিলেন, শ্রমের বিভাজনকে আরও গভীর করে উৎপাদনশীল শ্রমকে আরও বেশি উৎপাদনশীল করে তোলা উচিত । স্মিথ যুক্তি দিয়েছিলেন যে, প্রতিযোগিতার অধীনে শ্রমের বিভাজন আরও বেশি উৎপাদনশীলতার দিকে অর্থনীতিকে পরিচালিত করে, যেখানে কম দামে "সকলের জন্য" পর্যাপ্ত পরিমাণ পণ্য ও সেবা নিশ্চিত হয়। এভাবে মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ে। প্রসারিত বাজার এবং বর্ধমান উৎপাদন ও তার ধারাবাহিক পুনর্গঠন নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনের দিকে মানব সমাজকে পরিচালিত করে। যার ফলস্বরূপ আরও উৎপাদন বাড়ে , দাম কমে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। স্মিথের কেন্দ্রীয় বার্তাটি হলো : গতিশীল প্রতিযোগিতার অধীনে একটি প্রবৃদ্ধি-যন্ত্র , যা "দ্য ওয়েলথ অফ নেশনস" কে সুরক্ষিত করে।



কিছু প্রশ্নের উত্তর:


(১) আধুনিক সুশৃংখল অর্থনীতির সূচনা ঘটে কোন গ্রন্থের মাধ্যমে, কে লিখেছেন সেটি এবং কত সালে তা প্রথম প্রকাশিত হয়?

উঃ আধুনিক সুশৃংখল অর্থনীতির সূচনা ঘটে ‘দ্য ওয়েলথ অব নেশনস’ গ্রন্থের মাধ্যমে। তা লিখেছেন অ্যাডাম স্মিথ। তা প্রথম প্রকাশিত হয় ১৭৭৬ সালে।

[ উল্লেখ করা যায় যে , সেই গ্রন্থটির পূর্ণ নাম হলো: An Inquiry into the Nature and Causes of the Wealth of Nations , যাকে সংক্ষেপে The Wealth of Nations বলা হয়। ]


(২)"দ্য ওয়েলথ অফ নেশনস"তে অর্থনীতির কি কি মৌলিক ধারণা স্থান পায় ?

উঃ অর্থনীতির অদৃশ্য হাত (The Invisible Hand ) তথা বাজার অর্থনীতি (market economy ) ,‘স্ব-আগ্রহী প্রতিযোগিতা’ (self - interested competition ); মূল্য সংক্রান্ত ধারণা (concept of value)/ মূল্যের আপাত- অসামঞ্জস্য (paradox of value); শ্রম বিভাগ (division of labour ); বিশেষীকরণ (specialization); পরম ব্যয় সুবিধা (absolute cost advantage) ও মুক্ত বাণিজ্য (free trade); সম্পদের পুঞ্জীভুতকরণ (accumulation of wealth ) ইত্যাদি ।


(৩) "দ্য ওয়েলথ অফ নেশনস" এ স্মিথের কেন্দ্রীয় বার্তা (central message) কি?

উঃ স্মিথের কেন্দ্রীয় বার্তা হলো গতিশীল প্রতিযোগিতার অধীনে একটি অদৃশ্য হাত চালিত প্রবৃদ্ধি-যন্ত্র পরিচালিত হয় , যা "দ্য ওয়েলথ অফ নেশনস" কেই সুরক্ষিত করে।


(৪) ‘দ্য ওয়েলথ অব নেশনস’-কে কেন ‘ম্যাগনাম ওপাস’ (magnum opus) বলে বিবেচনা করা হয় ?

উঃ অ্যাডাম স্মিথের ‘দ্য ওয়েলথ অব নেশনস’ অর্থনীতির জগতে প্রথম আধুনিক কাজ (modern work ) বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অ্যাডাম স্মিথের যতগুলো বই ও নিবন্ধ প্রকাশ পেয়েছে, তাদের মধ্যে ‘দ্য ওয়েলথ অব নেশনস’ কে অনন্য / যুগান্তকারী গ্রন্থ বলে দাবি করা হয়। এর প্রেক্ষিতে তাঁর ‘দ্য ওয়েলথ অব নেশনস’ হলো একটি ‘ম্যাগনাম ওপাস’। তবে অ্যাডাম স্মিথ নিজে মনে করেন যে, তাঁর ‘দ্য থিওরি অব মরাল সেন্টিমেন্টস’ গ্রন্থটি সবচেয়ে উৎকৃষ্ট।


(৫) ম্যাগনাম ওপাস (magnum opus) এর উদাহরণ হিসাবে একটি চিত্রকর্ম সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পায়, সেটি কি?

উঃ উঃ আর্টিস্ট লিওনার্দো দা ভিঞ্চি/ভিনসি (Leonardo da Vinci) অংকিত ‘মোনা লিসা’ (Mona Lisa) হলো তাঁর যাবতীয় চিত্রকর্মের মধ্যে শ্রেষ্ঠ / অনবদ্য, আর তাই ‘মোনা লিসা’ চিত্রকর্ম হলো একটি ‘magnum opus’।


কৃতজ্ঞতাঃ উইকিপেডিয়া (Wikipedia)


ধন্যবাদ অন্তে,

মনতোষ চক্রবর্তী।





50 views0 comments

Recent Posts

See All

Comments


bottom of page