top of page
Search
  • Writer's pictureProf Manotosh Chakravarty

Economist John Law- an introduction

কলংকিত নায়ক অথচ স্মরণীয় অর্থনীতিবিদ

জন ল’ John Law (1671-1729)

জন ল’ ছিলেন একজন জুয়াড়ি , ছিলেন মৃত্যুদণ্ডের আসামি (পরে অবশ্য রেহাই পান দন্ড থেকে) , জেল-পলাতক , হয়েছিলেন কোটিপতি - সহসাই হয়েছিলেন নিঃস্ব। আবার সেই জন ল’ ছিলেন ফ্রান্সের সম্রাটের আস্থাভাজন অভিভাবক, ব্যাংক মালিক ও প্রতিষ্ঠাতা , কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্থপতি, অর্থনীতির বিখ্যাত গ্রন্থ রচয়িতা( যে গ্রন্থ আধুনিক মুদ্রানীতির ভিত্তি হিসাবে স্বীকৃত), দ্যা মিসিসিপি কোম্পানি গঠন , আবার সেই মিসিসিপি কোম্পানির ধ্বংস ও ‘দ্যা মিসিসিপি বাবল’-'র মাধ্যমে ফ্রান্স সহ ইউরোপে ব্যাপক অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলার কলংকিত নায়ক , রাতের অন্ধকারে পলায়ন ও নির্বাসিত জীবন ও দারিদ্রের মাঝে মৃত্যু বরণকারী স্কটিশ অর্থনীতিবিদ। বিচিত্র তাঁর জীবন-



জেনে নেয়া যাক বিচিত্র জীবন কাহিনী

জন ল’

John Law (1671-1729)

জন ল’ এডিনবার্গ-এ জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন Adam Smith এর পূর্বসূরি একজন স্কটিশ অর্থনীতিবিদ, যিনি বাণিজ্য-নির্ভর জাতীয় সম্পদ থেকে বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে মুদ্রাকে (অর্থকে) আলাদা করে উপস্থাপন করেন।

ডিউক অব অর্লিন্স এর অধীনে তিনি আর্থিক নিয়ন্ত্রক এর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ফ্রান্সের কিশোর লুইস পঞ্চদশের অভিভাবকের দায়িত্বও পালন করেন। 1716 সালে জন ল’ ফ্রান্সে একটি প্রাইভেট ব্যাংক ‘banque générale’ প্রতিষ্ঠা করেন। এক বছর পরে তাঁর অনুরোধে জাতীয়করণের মাধ্যমে প্রথম রাজকীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (Central Banque Royale) হিসাবে তা আত্মপ্রকাশ করে । ব্যক্তিগত পর্যায়ে সেখানে প্রধানত জন ল’ এবং লুইস পঞ্চদশের তহবিল নিয়োজিত ছিল ; আর মূলধনের তিন-চতুর্থাংশ গঠিত হয়েছিল সরকারি বিল এবং সরকার -গৃহীত নোট এর দ্বারা। প্রকৃত অবস্থায় এটাই হয়ে উঠেছিল ফ্রান্সের জাতিগত প্রথম কার্যকরী কেন্দ্রীয় ব্যাংক । আংশিকভাবে রূপা (silver ) দ্বারা এর রিজার্ভ সমর্থিত হলেও , এটি মূলত একটি ভগ্ন-রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ছিল।

The Banque Royale কর্তৃক সরবরাহকৃত তহবিল নিয়ে জন ল’ এর প্রত্যক্ষ ভূমিকার মাধ্যমে the Mississippi Company প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হয়েছিল। পরবর্তীতে সেই Mississippi Company এর বিশৃঙ্খল পতন [যা সপ্তদশ শতাব্দীর হল্যান্ডের টিউলিপ ম্যানিয়া (tulip mania) এর সাথে তুলনীয়] , ফ্রান্সের ভয়ানক বিপর্যয় ডেকে এনেছিল।

‘মিসিসিপি বুদ্বুদ’ (The Mississippi bubble) এর সঙ্গে ইংল্যান্ডের ‘দক্ষিণ-সাগর বুদ্বুদ’ (the South Sea bubble) এর অনেকটা মিল খুঁজে পাওয়া যায় । দ্য মিসিসিপি বুদ্বুদ যেমন Mississippi Company এর বিশৃঙ্খল পতন এর সাথে জড়িত , তেমনি the South Sea bubble জড়িত ছিল the East India Company এর বিপর্যয়ের সাথে। জন ল’ ছিলেন একজন তাসের জুয়াড়ি। নানা ধরণের মানসিক গণনার ভিত্তিতে তিনি বাজি ধরতেন/ ঝুঁকি নিতেন ।



তিনি মূল্য সংক্রান্ত অপ্রাচুর্যতা/ স্বল্পতার তত্ত্ব সম্পর্কে ধারনা প্রদান করেন। তিনি ধারণা পোষণ করতেন যে, টাকার সৃষ্টি অর্থনীতিকে উজ্জীবিত করে, আর তাঁর মতে ধাতব মুদ্রার তুলনায় কাগজি টাকা বেশি পছন্দনীয় বা উপযোগী। তিনি আরো বলেন যে, লভ্যাংশ প্রদানকারী শেয়ার পত্র উৎকৃষ্ট ধরণের অর্থ (মুদ্রা) হিসাবে গণ্য হতে পারে। জন ল’ এর প্রকল্পই ছিল সুবিধাভোগী "ধনকুবের" সৃষ্টি করা, সেই জন ল’ এর প্রকল্প থেকেই বিশ্বে "millionaire" শব্দটি পরবর্তীতে বহুল প্রচলিত হয়ে ওঠে।



ব্যাঙ্কার এবং স্বর্ণকার পরিবারে জন ল’ জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চ বিদ্যালয় পড়াশুনা শেষ করে 14 বছর বয়সে পারিবারিক ব্যবসায় যোগদান করেন এবং ব্যাংকিং ও ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে পাঠ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করেন । 1688 সালে পিতা উইলিয়াম মারা যান। জন ল’ নিজেদের পারিবারিক ফার্ম এর প্রতি ক্রমেই অনাগ্রহী হয়ে উঠেন এবং বেহিসাবী ব্যয়ে আকৃষ্ট হন, জুয়ায় বিরাট অংকের অর্থ অপচয় করেন। লন্ডনে পাড়ি জমান ও বিলাস জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। 1694 এর 9 এপ্রিল বেপরোয়া জন ল’ লন্ডনে ব্লুমসবেরি স্কয়ার-এ এলিজাবেথ ভিলিয়ার্স কে ভালোবাসতে গিয়ে এডওয়ার্ড "Beau" উইলসন এর সাথে দ্বন্দ্ব যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। জন ল’ সেই লড়াইয়ে তলোয়ারের এক কোপে (খোঁচায়) উইলসনকে হত্যা করেন। সেই হত্যার দায়ে তাকে অভিযুক্ত ও গ্রেফতার করা হয় এবং বিচারে মৃত্যুদন্ড এর রায় দেয়া হয়। তবে উইলসন এর ভাই আদালতের কাছে ‘আরো রক্তক্ষরণ’/ আরো মৃত্যু কাম্য নয়’ মনে করে জন ল’ এর মৃত্যু দন্ডের আদেশ রহিতকরণের আপীল করেন। ল’ এর মৃত্যু দন্ড এর আদেশ রহিত হয় এবং পরিবর্তে জরিমানা ও কারাবন্দীত্বের আদেশ হয়। তবে ল’ একদিন সুযোগ বুঝে কারাগার থেকে অ্যামস্টারডামে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।




তিনি স্কটল্যান্ড ফিরে আসেন এবং 1707 এর চুক্তি ‘Treaty of Union’ বিষয়ে বিতর্কে অবদান রাখেন। সে সময়কালে তিনি একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন , যার শিরোনাম হলো Money and Trade Considered: with a Proposal for Supplying the Nation with Money (1705) .




স্কটল্যান্ডে একটি জাতীয় ব্যাংক সৃষ্টির তাঁর প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। ফলে তিনি তাঁর উচ্চাশা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে আবার বিদেশ পাড়ি জমান। তিনি দশ বছর ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডস এর মধ্যে কেবল যাতায়াত করেন এবং অর্থ-বিষয়ে নানা অনুমান (speculation) ও বাস্তব ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে সময় অতিবাহিত করেন । তৎকালীন ফরাসি অর্থনীতির বিরাজমান সমস্যাগুলো জন ল’ এর জন্য তাঁর আশা ও ভাবনা বাস্তবায়নের সুযোগ সৃষ্টি করে। তাঁর ভাবনা (idea ) হলো নাবালক একচেটিয়াগুলোকে বিলুপ্ত করে একটি বিশাল ‘একচেটিয়া কারবার’ সৃষ্টি করা যেখানে একটি ব্যাঙ্ক জাতীয় পর্যায়ে ব্যবসা- বাণিজ্যে যাবতীয় অর্থ সংস্থান করবে। তাঁর চিন্তা অনুসারে রাষ্ট্রীয় মদতে পরিচালিত এই একচেটিয়া কারবার থেকে যে মুনাফা আসবে, তার দ্বারা জাতীয় ঋণও পরিশোধ করা সম্ভব হবে।


ল 'র প্রস্তাব ভেবে দেখার জন্য কাউন্সিল সভা বসে, কিন্তু , সেই প্রস্তাব 1715 সালের 24 অক্টোবর প্রত্যাখ্যাত হয় । নাছোড়বান্দা ল’ ইতোমধ্যে ‘প্লেস লুই-লি-গ্র্যান্ড’ এ বাড়ি করেন, যা ছিল ‘royal square’ যেখানে তিনি প্যারিসের বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিমন্ত্রণ করে খাওয়াদাওয়া এবং বিনোদন এর ব্যবস্থা করেন। এভাবে ল’ ‘ডিউক অব অর্লিন্স’ এর মতো গন্যমান্য ব্যক্তিদের মনোযোগ আকৃষ্ট করতে পেরেছিলেন। প্যারিসের সবচেয়ে স্বচ্ছল ব্যক্তিদের জুয়ার আড্ডায় নিয়মিত অংশ গ্রহন করতে লাগলেন তিনি । সর্বদা মর্যাদাপূর্ণ এবং মার্জিত পোষাক পরিহিত দীর্ঘদেহী ল’ আমস্টারডাম থেকে ভেনিস অব্দি প্রসারিত ইউরোপের আর্থিক হাব -এ ল’ সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন । আমস্টারডাম , প্যারিস ও ভেনিস -এ তাঁর নিয়মিত যাতায়াত ও বক্তব্য -বিবৃতি প্রদানের মাধ্যমে ল’ তাঁর আর্থিক নীতি এবং ঋণ মাধ্যম হিসাবে কাগজি টাকা সংক্রান্ত তত্ত্বের প্রতি অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হন । ল 'র কেন্দ্রীকৃত ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ধারণা , যা কাগজি টাকার নতুন এক রূপের সঞ্চার করে, যা সেই সময়ের এক ব্যতিক্রমী ও অগ্রণী ধারণা হিসাবে বিবেচিত হয়। তবে সরকারের ছত্রছায়ায় একচেটিয়া কোম্পানিকে উৎসাহিত করার কাজটি মূলত বণিকবাদী চিন্তাধারার ফসল বলে সমালোচকদের ধারণা ।


চতুর্দশ লুই পরিচালিত যুদ্ধের দ্বারা ফ্রান্স তখন সম্পূর্ণ বিনষ্ট হতে চলেছিল, অর্থনৈতিকভাবে এবং আর্থিকভাবে- উভয় দিক থেকেই। মূল্যবান ধাতুর দুষ্প্রাপ্যতার কারণে দেশে মুদ্রা প্রচলনে নুতন কয়েন উৎপাদনের ঘাটতি দেখা দেয় । ফ্রান্সে ল'র আগমনের সতের মাস পর চতুর্দশ লুই এর মৃত্যু হয়, সেই অবস্থায় ডিউক অব অর্লিন্স শেষ পর্যন্ত ল 'কে তাঁর প্রস্তাবনার কার্যকারিতা প্রদর্শনের সুযোগ দেন। যেহেতু, বিধ্বংসী স্প্যানিশ যুদ্ধের পর ফ্রান্স এর অর্থনীতি ছিল বদ্ধ (stagnant) এবং তার জাতীয় (রাষ্ট্রীয়) ঋণ ছিল ভঙ্গুর অর্থনীতির জন্য বিশাল ভার । সেই অবস্থায় ল ' শিল্প উদ্দীপ্তকরণে স্বর্ণ এর পরিবর্তক হিসাবে কাগজ ভিত্তিক ক্রেডিট প্রদানের প্রস্তাব করেন এবং তারপর সেই কাগজ ভিত্তিক ক্রেডিট সরবরাহ বাড়িয়ে দিতে বলেন ও সর্বোপরি অর্থনৈতিক উদ্যোগ সংশ্লিষ্ট শেয়ার বন্টন করে জাতীয় ঋণ কমাতে প্রয়াস পান । 1716 এর পহেলা মে, ল ' কেন্দ্রীভূত ব্যাংক পরিকল্পনার একটি পরিমার্জিত সংস্করণ উপস্থাপন করেন। তাঁর প্রস্তাব অনুযায়ী একটি বেসরকারি ব্যাংক অনুমোদিত হয়, যেখানে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ তহবিলের এক- চথুর্তাংশ মুদ্রা আকারে এবং বাকিটা বিলুপ্ত সরকারি বন্ড সরবরাহ করে মেটানোর অনুমতি দেওয়া হয় । ল ' এর প্রস্তাবনার দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য ছিল- এই ব্যক্তিগত ব্যাংক তার নিজস্ব মুদ্রা ইস্যু করতে পারবে, তবে সেখানে লুই-সোনার সমর্থন থাকতে হবে ।

মিসিসিপি কোম্পানি ও মিসিসিপি বাবল

মিসিসিপি বাবল নামক ঘটনার স্থপতি বা নায়ক হলেন ল'। Louisiana এর ট্রেডিং কোম্পানিগুলোকে একই ছাতার নিচে আনার জন্য একক একচেটিয়া হিসাবে মিসিসিপি কোম্পানি গড়ে ওঠে। তবে সেই কোম্পানি শেষ হয়েছে প্রাথমিকভাবে banque générale এর ধ্বংসের (দেউলিয়াত্বের) মাধ্যমে এবং পরবর্তীতে শেয়ার অবমূল্যায়িত হতে হতে । ব্যাঙ্ক নোট রূপান্তর, সীমিত লেনদেন, গ্রাহকদের বিশাল লাইন, কাগজের নোট (মুদ্রা) পাল্টিয়ে ধাতব মুদ্রা নেওয়ার হিড়িক, মিসিসিপি কোম্পানির স্টক মূল্য-এর অব্যাহত পতন, সরকারী নানা আদেশ জারি, খাদ্যের দাম বৃদ্ধি, বিক্ষিপ্ত ব্যাংক ঘন্টা এবং দাঙ্গা ও পাদপিষ্ট হয়ে পঞ্চাশ জন মানুষের মৃত্যু- সব মিলিয়ে এক অতি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। এর মধ্যে তাঁর সহায় সম্পত্তি সব ফেলে রেখে রাতের অন্ধকারে ল’ প্যারিস ছেড়ে পালিয়ে গেলেন এবং আর সেখানে ফিরে যেতে পারেননি। যেমন দ্রুত তার টাকার গাছে উত্থান ঘটেছিলো , তেমনি দ্রুত তাঁর পতন হলো । তবে বিস্ময়ের বিষয় হলো -জন ল’ এর তত্ত্ব 300 বছর পরে এসে দেখা গেলো " তাঁর তত্ত্বগত ধারণাই হলো আধুনিক আর্থিক তত্ত্ব এর অন্যতম অংশ ।"

জন ল’ 1720 এর 22 ডিসেম্বর ব্রাসেলস-এ উপস্থিত হয়েছিলেন বলে পরবর্তীতে জানা যায়। সেখানে তিনি দারিদ্রে নিপতিত হন। ফ্রান্সে তাঁর যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়। এর মধ্যেও তিনি রোম ও ভেনিস নগরীতে পরবর্তী কয়েক বছর জুয়া খেলার নিয়োজিত ছিলেন ভাগ্য ফেরাতে। কিন্তু তার সমৃদ্ধি আর ফিরে আসেনি । কখনও ফ্রান্সে ফিরে যেতে না পারলেও লন্ডনে তিনি আশ্রয় পেয়েছিলেন। লন্ডনে চার বছর বসবাস করার পরে ভেনিস চলে যান, সেখানে তিনি নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান 1729 সালে। বিচিত্র তাঁর জীবন, বিচিত্র এক অর্থনীতিবিদ।

জন ল’ এর পিতা ছিলেন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকার। তিনি নিজেও ব্যাংক প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সমগ্র জীবন ব্যাপৃত ছিলেন। তিনি কাগজি মুদ্রার ভিত্তি হিসাবে ধাতব মুদ্রা এবং আবার কখনও কাগজি মুদ্রার ভিত্তি হিসাবে জমিকে বিবেচনা করেন। ১৭০৫ সালে তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘Money and Trade Considered: With a Proposal for Supplying the Nation with Money’ (1705); এবং ১৭০৬ সালে ‘Treatise on Money and Commerce’ (1706), রচিত হয়েছিল । দার্শনিক লকের মতই জন ল’ মূল্য সম্পর্কে চাহিদা ও যােগান তত্ত্ব নিয়ে বক্তব্য রাখেন। মুদ্রার মূল্য বা গড় দামস্তর নির্ণয়ের বিষয়টিকে তিনি মূল্যের সার্বিক তত্ত্বের অংশ হিসাবে হিসাবে বিবেচনা করেন। ব্যবহারিক ও বিনিময় মূল্যের ধারণার মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কেও তিনি সবাইকে সচেতন করেন। হীরক ও পানির দামের মধ্যে যে অসামঞ্জস্য লক্ষ্য করা যায়, সে সম্পর্কেও তিনি বক্তব্য রাখেন। পরবর্তীকালে এডাম স্মিথ তাঁর ‘দি ওয়েলথ অব নেশন্স’ গ্রন্থে জন ল’-এর বক্তব্য উল্লেখ করেন। জন ল' ব্যাংক ব্যবস্থা সম্পর্কে স্কটল্যান্ড,, ফ্রান্স এবং ইটালিতে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেন- এটি অনস্বীকার্য । তাঁর সুপারিশ অনুসারে ব্যাংক-মুদ্রা যথেষ্ট প্রসারিত হয়। অর্থনীতিতে সফলতার কারণে জন ল’ ফ্রান্সের অর্থ মন্ত্রীর পদও লাভ করেন, আবার ১৭২০ সালের শেষ ভাগে যখন অর্থনৈতিক ধ্বস নামে, তখন জন ল' তার জন্য দোষি সাব্যস্ত হন। ফ্রান্সে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়। কাগজি মুদ্রার যথেচ্ছা প্রসারের পরিণতি হিসাবে অর্থনীতিতে তৎকালে দুর্দশা নেমে আসে বলে জন ল’ কে দায়ী করা হয়। সেই কলংক নিয়েই জীবনের শেষ ক’টি বছর ভেনিসে তিনি নির্বাসনে কাটিয়ে দেন।


কৃতজ্ঞতা:Wikipedia এবং E.J. Hamilton, 'Law, John', International Encyclopedia of the Social Sciences, vol, 9, ed. D.L. Sills (Macmillan Free Press, 1968)


ধন্যবাদ। - মনতোষ চক্রবর্তী

48 views0 comments

Recent Posts

See All

Comments


bottom of page