top of page
Search
  • Writer's pictureProf Manotosh Chakravarty

George Stephenson- The Remarkable Life of 'The Rail- Father'

ইতিহাসের পাতা ধরে অর্থনীতির কাহিনী-

‘রেল-পিতা’: কোলিয়ারিতে বেড়ে ওঠা গো-পালন এবং কয়লা ও পাথর টানায় নিয়োজিত নিরক্ষর ঘোড়ার গাড়ির চালক, কিনা বিশ্বের অন্যতম প্রকৌশলী!

-মনতোষ চক্রবর্তী





জর্জ স্টিফেনসন -

রেলওয়ে প্রতিষ্ঠাতার অসাধারণ জীবন-চরিত




George Stephenson (1781 - 1848)

জর্জ স্টিফেনসন একজন ব্রিটিশ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এবং যান্ত্রিক প্রকৌশলী ছিলেন, যদিও এ বিষয়ে কোনো শিক্ষাগত সার্টিফিকেট তাঁর ছিল না । তিনি "রেলপথের জনক" হিসাবে খ্যাত। তাঁর নির্বাচিত রেল গেজ, যা কখনও কখনও 'স্টিফেনসন গেজ' নামে পরিচিত, এর পরিমাপ ভিত্তি ছিল 4 ফুট 8 1⁄2 ইঞ্চি (1.435 মি) এর স্ট্যান্ডার্ড গেজ, যা বিশ্বের বেশিরভাগ রেলওয়ে ব্যবহার করে।

স্টিফেনসন প্রবর্তিত রেল পরিবহন ছিল ১৯ শতকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত আবিষ্কার এবং তা ছিল শিল্প বিপ্লবের একটি মূল উপাদান। জর্জ এবং তার পুত্র রবার্টের সংস্থা ‘রবার্ট স্টিফেনসন এন্ড কোম্পানি’র দ্বারা নির্মিত “লোকোমোশন নং ১” হ'ল প্রথম স্টিম লোকোমোটিভ, যা সর্বজনীন রেলপথে যাত্রী বহন করার কাজে ব্যবহৃত হয়েছিল। ১৮২৫ সালে চালু সেই রেললাইন এর নাম ছিল ‘স্টকটন এন্ড ডার্লিংটন রেলওয়ে’। জর্জ ১৮৩০ সালে প্রথম পাবলিক আন্তঃনগর (inter-city) রেল চলাচলের জন্য রেললাইন নির্মাণ করেন। বিশ্বের সেই প্রথম আন্তঃনগর রেললাইন ‘দ্য লিভারপুল এন্ড ম্যানচেস্টার’ ১৮৩০ সালে চালু হয়।


১৮০২ সালে রিচার্ড ট্রেভিথিক-কে স্টিম লোকোমোটিভের প্রথম বাস্তবসম্মত নকশার কৃতিত্ব দেওয়া হয়। স্থানীয় অনেকেই ট্রেভিথিক এর প্রচেষ্টা লক্ষ করে অনুপ্রাণিত হন, তারই ধারাবাহিকতায় আসেন জর্জ স্টিফেনসন। ১৮১৪ সালে জর্জ স্টিফেনসন তাঁর প্রথম স্টিম লোকোমোটিভের নকশা প্রস্তুত করেন। কিলিংওয়ার্থ ওয়াগনওয়েতে কয়লা পরিবহনের ১ম স্টিম লোকোমোটিভটির নামকরণ করা হয়েছিল ‘ব্লুচের’ বা 'ব্লুচার' । স্টিফেনসন কিলিংওয়ার্থে মোট ১৬ টি লোকোমোটিভ তৈরি করেছিলেন বলে কথিত আছে।

রেলপথের বিকাশে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়েছিল ব্রিটেন, যা কাঁচামাল এবং উৎপাদিত পণ্য পরিবহনের সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে শিল্প বিপ্লবের অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করে । স্টিফেনসন দূরদর্শী হয়ে বুঝতে পেরেছিলেন যে, বিভিন্ন এলাকায় নির্মিতব্য পৃথক পৃথক লাইনগুলো শেষ পর্যন্ত এক সাথে যুক্ত হবে এবং তাদের সবার একই ‘গেজ’ থাকা দরকার। আজ সারা বিশ্বজুড়ে যে ‘স্ট্যান্ডার্ড গেজ’ ব্যবহার করা হয়, এটি সম্ভব হয়েছিল তাঁরই মহতী উদ্যোগে। স্টকটন এবং ডার্লিংটন রেলপথ এবং লিভারপুল এবং ম্যানচেস্টার রেলপথের সাথে জর্জ স্টিফেনসনএর নাম চিরস্মরণীয় হয়ে আছে ।



দ্য 'ব্লুচার'-রেল পরিবহণের একটি মাইলফলক প্রোথিত হয় 25 জুলাই, 1814-তে


1814 সালে, 33 বছর বয়সী স্টিফেনসন ট্রামওয়েস এবং স্টিম ইঞ্জিন সমন্বিত করে করে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর লোকোমোটিভ তৈরি করেছিলেন। তার নামকরণ হয়েছিল 'ব্লুচার'। তা প্রস্তুত হয়েছিল কয়লা তোলার/ পরিবহনের জন্য । 'ব্লুচার' নামকরণ করা হয়েছে প্রুশিয়ান জেনারেল-এর নাম অনুসরণে, যিনি নেপোলিয়নকে ওয়াটারলুতে পরাজিত করতে তাঁর সৈন্যদের দ্রুত গতিতে যাত্রা করিয়েছিলেন। ব্লুচারের শীর্ষ গতি ছিল প্রতি ঘন্টায় 4 মাইল । এটি কোনও ঘোড়ায় ভ্রমণ এর চেয়ে ধীর, তবে এর আটটি ওয়াগন 30 টন মাল বহন করতে পারতো, সেটি কিন্তু কম নয় । তবে ব্লুচার বারবার ভাঙ্গার ঝুঁকিতে পড়ে এবং এর শক্তি এবং ওজন ট্র্যাকগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। তবে প্রতিটি ভাঙ্গন, স্টিফেনসনকে আবার অন্য কোনো সমাধান বের করতে উৎসাহ জোগায় ।


দ্য 'ব্লুচার',1814


বিশ্বের প্রথম শক্তিচালিত লোকোমোটিভ চালনার রেলপথ নির্মাণ

১৮১৯ সালে স্টিফেনসন বিশ্বের প্রথম শক্তিচালিত স্বীকৃত রেল (solely machined powered) হিসাবে সান্ডারল্যান্ড/ সুন্দরল্যান্ডে (Sunderland) একটি আট মাইল রেলপথ তৈরি করেছিলেন। তিনি তার নিজের কাস্টিং / ঢালাই লোহার রেলগুলোর পেটেন্ট করেন।


স্টকটন এবং ডার্লিংটন রেলপথ ও বিশ্বের প্রথম পাবলিক যাত্রীবাহি বাষ্প-ট্রেনের প্রথম যাত্রা-১৮২৫।

দু'বছর পরে তিনি স্টকটন এবং ডার্লিংটন রেলপথ নির্মাণের জন্য প্রকৌশলী নিযুক্ত হন। ১৮২১ সালে জর্জ স্টিফেনসন রেলরোড তৈরি করেন স্টকটন এবং ডার্লিংটনের মধ্যে। স্টিফেনসন যখন খুঁজে পেয়েছেন যে আর একজন ব্যক্তি আরও ভাল রেল লাইন তৈরির উপায় আবিষ্কার করেছেন, তখন তিনি নিজের আবিষ্কারটি বাতিল করেন এবং বাড়তি ব্যয় হলেও উন্নত সংস্করণটি ব্যবহার করেন। জর্জ স্টিফেনসন তখন যে রেললাইন স্থাপন করেন, তা তৈরি হয় cast iron এর পরিবর্তে wrought iron দ্বারা। কারণ কাস্ট আয়রন এর তৈরি রেল লাইন সহজে ভেঙে যেতে পারে -এ আশঙ্কা ছিল। ১৮২৫ সালে স্টিফেনসনের ইঞ্জিন, “লোকোমোশন নং -১” নামে পরিচিত , তা ডার্লিংটন থেকে স্টকটনে 450 জন যাত্রী নিয়ে প্রতি ঘন্টায় 15 মাইল বেগে 25 মাইল পথ অতিক্রম করেছিল । এটি ছিল বিশ্বের প্রথম পাবলিক যাত্রীবাহি বাষ্প-ট্রেনের প্রথম যাত্রা। এভাবে ১৮২৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর স্টকটন এবং ডার্লিংটনের মধ্যে রেলওয়ের যাত্রা শুরু হয়।


“Locomotion No.1”, 1825

বিশ্বের প্রথম(১৮২৯) গতিময় স্টিম লোকোমোটিভ ‘দ্য রকেট’ এবং প্রথম আন্তঃনগর রেললাইন ‘দ্য লিভারপুল এন্ড ম্যানচেস্টার রেলওয়ে’(১৮৩০)

১৮২০ এর দশকের শেষের দিকে স্টিফেনসন লিভারপুল এবং ম্যানচেস্টার রেলওয়ে নির্মাণ করেন। তিনি কিছু বাঁধও নির্মাণ করেন (যার নির্মাণশৈলী অভিনবত্বের দাবি রাখে) এবং সেই সাথে অন্যান্য ব্যবস্থা অবলম্বন করে যথাসম্ভব রেলওয়েকে সমতলে রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন, যাতে রেল ইঞ্জিনের উপরে চাপ না পড়ে। ১৮২৯ সালে তিনি ‘রকেট’ নামক লোকোমোটিভ এর ডিজাইন করেন, যার গতিবেগ আগের চাইতে অনেক বেশি এবং আগের মডেলের চেয়ে হালকা।


১৮২৯ সালে রেলওয়ে মালিকরা ‘সেরা লোকোমোটিভ’ এর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। রেল লাইনগুলো যাতে ধ্বংস না হয়, তাই কেবল ছয় টনের কম থাকা মেশিনগুলি (ইঞ্জিনগুলো) প্রতিযোগিতা করতে পারবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। দশটি লোকোমোটিভ প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে বলে নাম নিবন্ধন করে । কিন্তু দশটির মধ্যে পাঁচটি রেস-ডে’র মধ্যে নিজেদের প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হয়। যান্ত্রিক সমস্যার কারণে আরও দুটি ব্যর্থ হয়। থাকে বাকি তিনটি। তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়। হাজার হাজার দর্শকের সামনে স্টিফেনসনের 'রকেট' প্রতি ঘন্টা ৩৬ মাইল বেগে রান করে রেকর্ড অর্জন করে এবং পুরষ্কার গ্রহণ করে। আমেরিকানরা এ দেখে স্টিফেনসনের কাছে ছুটে আসে, তার ট্রেন এবং কৌশলগুলো তাদের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যেতে তারা মরিয়া হয় ।


Decorative 1829 Stephenson Rocket Steam Locomotive


১৮২৯তে Rocket নামক লোকোমোটিভ এর উদ্ভাবক হিসাবে স্টিফেনশনকে ‘রেলওয়ের জনক (টি ফাদার অফ দি রেলওয়ে) বলে আখ্যায়িত করা শুরু হয়। ল্যাঙ্কাশায়ারের লিভারপুল এবং ম্যানচেস্টার এর মধ্যে যাতায়াতের উদ্দেশ্যে 1830 সালে স্টিফেনসনের লোকোমোটিভ, রকেট, প্রস্তুতি নেয়, যা প্রতি ঘন্টায় 36 মাইল গতি অর্জন করতে পারতো । লেখক Fanny Kemble রকেটের পরীক্ষামূলক চালনার একটি বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন-

“তুমি কল্পনা করতে পারবে না কেমন ভাবে রকেট ছুটে চলেছে, জাদুর মেশিন চালিত হয়েছে নির্দিষ্ট ছন্দে-তালে; অবাক হয়ে সবাই তা লক্ষ্য করেছে কি দুরন্ত গতিতে ছুটে চলেছে পাহাড়ের গা ঘেঁষে; তা ব্রিজ অতিক্রম করেছে , একটির পর একটি পাহাড় উপত্যকা অতিক্রম করেছে আর দূরের মানুষগুলো আমাদের দেখছে যেন আকাশে আমরা দাঁড়িয়ে আছি পিগমিদের মতো ; অবাক বিস্ময়ে তারা হাততালি দিয়েছে।”


১৮৩০ সালে লিভারপুল এবং ম্যানচেস্টার রেলপথের উদ্বোধনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী এবং ওয়াটারলু-এর নায়ক, ডিউক অফ ওয়েলিংটন। তবে দূর্ভাগ্য যে, সরকারের এক মন্ত্রী রকেটের ধাক্কায় ছিটকে পড়েন এবং মারা যান । ‘রকেট’ এর চলাচল সেই দুর্ঘটনার কারণে পরবর্তীকালে বাতিল করা হয়। তবে তাতে রেলযুগ থেমে যায়নি, জর্জ স্টিফেনসন ছিলেন রেল-বিকাশের প্রধান কান্ডারি ।


'রেলপথের জনক' ( 'রেল পিতা') হিসাবে বিতর্ক

1848 সালে তাঁর মৃত্যুর কয়েক বছরের মধ্যে জর্জ স্টিফেনসনকে 'রেলপথের জনক' ( 'রেল পিতা') বলা হয়েছিল, কিন্তু এই প্রশংসাকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। কারণ বিশ্বের প্রথম রেলপথ ব্যবস্থার বিকাশে আরও প্রকৌশলী জড়িত ছিলেন। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিলেন একজন কর্নিশম্যান রবার্ট ট্র্যাভিথিক, যিনি ১৮০৩ সালে রেলপথে চলাচলের জন্য প্রথম স্টিম লোকোমোটিভ তৈরি করেছিলেন।

রাস্তা বা কাঠের ট্র্যাকগুলির জন্য পর্যাপ্ত শক্তিশালী ইঞ্জিন খুব ভারী ছিল, তাই প্রয়োজন হয়েছিল উপযুক্ত রেল লাইন নির্মাণের । ট্র্যাভিথিক এর ব্যর্থ চেষ্টাকে রূপদান করেছিলেন জর্জ স্টিফেনসন এর নেতৃত্বে অন্যরা। Christian Wolmar তাঁর বই The Great Railway Revolution তে উল্লেখ করেছেন যে , যে স্টিফেনসন, যিনি অন্য লোকের (যেমন Trevithik এর ) ভাব-ধারণার (idea ) বিকাশে প্রতিভার সাক্ষর রেখেছিলেন, তবে রেলপথের পিতা, এতটা হয়তো ছিলেন না।


জর্জ স্টিফেনসন-শৈশব ও কৈশোর-এর কষ্ট এবং পরবর্তীতে সাফল্যের কাহিনী

নম্র স্বভাবের জন্য জর্জ স্টিফেনসন জীবনের শুরু থেকেই খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি নিরক্ষর পিতা-মাতার পুত্র। তাঁর বাবা উইলাম কোলিয়ারিতে কাজ করতেন এবং তার কৈশোরকাল থেকে তরুণ জর্জ একইভাবে কাজ করেছিলেন। তিনি কখনও স্কুলে যান নি, তবে ১৮ বছর বয়সে নিজ প্রচেষ্টায় পড়তে এবং লিখতে শিখেছিলেন এবং পাটিগণিতের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণও তিনি পেয়েছিলেন । তিনি 1800 এর ১ম দশকের গোড়ার দিকে বিভিন্ন কোলিয়ারিতে কাজ করতে গিয়ে ব্যবহৃত ইঞ্জিনগুলোর সাথে পরিচিত হন এবং এমন দক্ষতার সাথে ইঞ্জিনগুলোর বিকাশ সাধন করেছিলেন যে, 1812 সালে তিনি কিলিংওয়ার্থে 'ইঞ্জিন রাইট'(‘engine wright’) বা চিফ মেকানিক হিসাবে নিযুক্ত হন। সেখানে 1814 সালে তিনি Blucher নামে একটি ইঞ্জিন তৈরি করেন যা প্রতি ঘন্টায় চার মাইল গতিতে আটটি কয়লা বোঝাই ওয়াগন কয়লার 30 টন লোড টানতে পারে। এতে সন্তুষ্ট না হয়ে শীঘ্রই তিনি ইঞ্জিনের বাষ্প ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করেছিলেন যাতে বেশি টান দেওয়ার শক্তি অর্জিত হয়। এটিই পরিণত করেছিল ব্লুচারকে প্রথম সম্পূর্ণ কার্যকর স্টিম রেলওয়ে লোকোমোটিভে।

লেখাপড়ার সুযোগ বঞ্চিত জর্জ কিন্তু লেখাপড়া শিখতে আগ্রহী ছিলেন। 17-বছর বয়সে জর্জ নৈশ স্কুলে তার লেখাপড়া শুরু করেছিলেন এবং নিজেই স্কুল শিক্ষার খরচ বহন করেছিলেন। 18 -বছর বয়সে তিনি পড়তে, লিখতে এবং পাটিগণিত করতে শিখলেন । তার পিতা স্থানীয় কয়লাখনিতে কাজ করেন এবং তার পক্ষে জর্জকে বিদ্যালয়ের পড়ানোর সামর্থ্য নেই। তাই জর্জ দশ বছর বয়স পর্যন্ত গরু পালনের ( খামারের) কাজ করেন। তারপর তিনি কয়লাবাহী গাড়ি টেনে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘোড়া চালাতেন। জর্জের কাজগুলির মধ্যে অন্যতম হলো কয়লা ও পাথর বহন করে একস্থান থেকে অন্য স্থানে নেয়া।


স্টিফেনসন উন্নত রেলপথ তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন এবং তিনি কিলিংওয়ার্থ এবং অন্যান্য কোলিয়ারির জন্য আরও লোকোমোটিভ তৈরি করেছিলেন। তিনি একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেন। স্টিফেনসনের প্রচেষ্টায় ঘোড়া টানা রেলপথের পরিবর্তে স্টিম লোকোমোটিভ ভিত্তিক রেলপথের পরিকল্পনা পূর্ণাঙ্গ রূপ নেয়।

রকেট এর দূর্ঘটনা সত্ত্বেও, স্টিফেনসন রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় আরও বেশি কাজ পান, এবং আরও বেশি অর্থ পান। তার রেলপথের জন্য খনন কার্যগুলি আরো কয়লা ক্ষেত্র আবিষ্কার করতে সাহায্য করে। এর দ্বারা স্টিফেনসন যথেষ্ট ধনী হতে পেরেছিলেন এবং বিপুল জমি এবং বড় বাড়ি কিনতেও সমর্থ হয়েছিলেন । 1845 সালে, তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মারা যান। তিনি তৃতীয়বার বিবাহ করেন, কিন্তু সেই বিবাহ স্বল্পস্থায়ী হয়। ছয় মাস পরে, 1848 সালের 12 আগস্ট, ডার্বিশায়ার চেস্টারফিল্ডে তিনি মারা যান। তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর পাশে তাকে কবর দেওয়া হয়। তিনি যে আবিষ্কারগুলো পিছনে রেখে গেছেন তা শিল্প বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করেছিল এবং আধুনিক বিশ্বকে সেই আবিষ্কারগুলো প্রভূত সাহায্য করে।


Statue of George Stephenson



শিল্প বিপ্লবের গতি সঞ্চারে রেলওয়ের তথা স্টিফেনসন-এর অবদান


ব্রিটেনে শিল্প বিপ্লব এর শুরুতে বাষ্প ইঞ্জিন এর আবিষ্কার সেই শিল্প বিপ্লবের গতি সঞ্চারে বিশেষ ভূমিকা রাখে। শিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে বাষ্প ইঞ্জিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্রিটেনে সর্বপ্রথম রেল শিল্প এগিয়ে যেতে থাকে হাত ধরাধরি করে। লোহা ও ইস্পাত শিল্প এবং বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের প্রবর্তন ঘটে। রেলপথ স্থাপন, রেল বগি নির্মাণ, রেলওয়ে ইঞ্জিন প্রস্তুতকরণ সবকিছুই একযোগে রেলপথের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। রেলওয়ে নিজেই একটি শিল্প হিসাবে শিল্পায়ন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। রেল শিল্পের সাথে যে সম্মুখমুখী ও পশ্চাৎমুখী সংযোগ প্রভাব(Forward and backward linkage) পরিলক্ষিত হয়, সেই সংযোগ প্রভাব এর মাধ্যমে শিল্পের বিকাশ ত্বরান্বিত হয়েছিল। যেমন ব্রিটেনে শিল্প বিপ্লবের শুরুতে বস্ত্রশিল্প প্রসার লাভ করেছিল এবং সেই বস্ত্রের বাজার সৃষ্টি ও কাঁচামাল আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে রেলওয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বাষ্প চালিত ট্রেন চালু করে ১৮২৫ সালে যে যুগান্তকারী পদক্ষেপের সূচনা করেছিলেন জর্জ স্টিফেনসন, এরই ওপর ভর করে বৃটেনের শিল্প বিপ্লব তরতরিয়ে এগিয়ে যায়। তৎকালীন ঔপনিবেশিক ভারতীয় রেলপথও চালু হতে বেশি দেরি হয়নি । ১৮২৫ সালে ব্রিটেনে রেলপথ চালু হওয়ার 27 বছর পরে ১৮৫২ তে ভারতে রেলপথের সূচনা ঘটে। অচিরেই আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্র-এ রেলপথ চালু হওয়ার উদ্যোগও পরিলক্ষিত হয়। এভাবে ব্রিটেনের রেলপথ পরবর্তীতে গোটা বিশ্বের রেল এবং রেল শিল্পের সম্প্রসারণে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল। কাজের জর্জ স্টিফেনসন-এর রেল সংক্রান্ত অবদান বিশ্ববাসীর কাছে স্মরণীয় হয়ে আছে।


জর্জ স্টিফেনসন-এর স্মৃতিবাহী পাঁচ পাউন্ডের নোট


এ আলোচনা থেকে প্রতিযোগিতামূলক/ নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষায় অংশ গ্রহনকারীরা নিচের তথ্যগুলো/ প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে পারবে :

(১) "রেলপথের জনক"/ “রেল-পিতা” হিসাবে কার নাম প্রধানত উচ্চারিত হয়?

(২) বিশ্বে প্রথম রেলপথ কোন দেশে চালু হয়?

(৩) প্রথম স্টিম লোকোমোটিভ কে তৈরি করেন?

(৪) কোন লোকোমোটিভকে বিশ্বে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর ‘মালবাহি ট্রেন ’(গুডস ট্রেন ) এর মাইল ফলক হিসাবে গণ্য করা হয় এবং কত সালে তার সূচনা ঘটে? উক্ত লোকোমোটিভ-এর নামকরণের ঐতিহাসিক তাৎপর্য ছিল, সেটি কি?

(৫ ) বিশ্বের প্রথম শক্তিচালিত ইঞ্জিনে রেল (solely machined powered) চলাচলের উপযোগী রেলপথ তৈরি কে করেছিলেন, কত সালে , রেলপথটি কতটা দীর্ঘ ছিল এবং কোথায় তার অবস্থান ? (৬) কত সালে , কি নামে প্রথম স্টিম লোকোমোটিভ রেলপথে যাত্রী বহন করার কাজে ব্যবহৃত হয়েছিল এবং সেই রেল পথের নাম কি ?

(৭) বিশ্বে প্রথম আন্তঃনগর (inter-city) রেল চলাচলের জন্য কোন রেললাইন কত সালে কার নেতৃত্বে নির্মাণ করা হয়েছিল এবং চলাচলকারী প্রথম লোকোমোটিভটির নাম কি ও কে তার উদ্ভাবক?

(৮) রেল চলাচলে ‘দ্য রকেট’ কথাটি কেন তাৎপর্যপূর্ণ?

(৯) বিশ্বে প্রথম রেল মৃত্যু-দুর্ঘটনা কোনটি? কত সালে কোথায় তা হয়েছিল?

(১০) ভারতে প্রথম রেলওয়ে কত সালে যাত্রা শুরু করে?


ফটো উৎস ও কৃতজ্ঞতা

Richard Cavendish, History Today, 7 July, 2014

Wikipedia


119 views0 comments

Recent Posts

See All

Comments


bottom of page