top of page
Search
  • Writer's pictureProf Manotosh Chakravarty

Scarcity context - definition of Economics by L Robbins





লিওনেল সি. রবিন্স (Lionel C.Robbins: 1898-1984) ১৯২০এর দশকের বিখ্যাত একজন ইংরেজ অর্থনীতিবিদ হলেন লিওনেল সি. রবিন্স। ১৯২৯ সালে লন্ডন স্কুল অব ইকোনােমিক্সের চেয়ারম্যানের পদটি তিনি অলংকৃত করেন। তিনি অর্থনীতির সম্পদ-স্বল্পতাভিত্তিক সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তাঁর সে সংজ্ঞা যুগ যুগ ধরে অর্থনীতির শিক্ষার্থীরা পাঠ করছে। আর এর মাধ্যমেই লর্ড লিওনেল রবিন্স যুগ হতে যুগান্তরে সারা বিশ্বের অর্থনীতির শিক্ষার্থীদের মাঝে স্মরনীয় হয়ে আছেন।


স্বল্পতার দৃষ্টিকোণ থেকে এল রবিন্স প্রদত্ত অর্থনীতির সংজ্ঞা(Definition of economics given by L. Robbins in the context of scarcity)


১৯৩২ সনে রবিন্সের গ্রন্থ The Nature and Significance of Economic Science প্রকাশ পায়। সেই গ্রন্থে তিনি অর্থনীতি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞাটি প্রদান করেন। স্বল্পতাই মানবজীবনের মৌল অর্থনৈতিক সমস্যাগুলাের উৎস। অসীম অভাব ও সম্পদের স্বল্পতা- এ দুয়ের সমন্বয় সাধনের প্রয়াস লক্ষ্য করা যায় অধ্যাপক এল. রবিন্সের সংজ্ঞায়। তার মতে, “অর্থনীতি হচ্ছে একটি বিজ্ঞান, যা মানুষের অসীম অভাব ও বিকল্প ব্যবহারযােগ্য সম্পদের মাঝে সম্পর্ক স্থাপনের দ্বারা মানবীয় আচরণকে বিশ্লেষণ করে”। অধ্যাপক এল, রবিন্সের সংজ্ঞা ‘লক্ষ্য’ আর ‘উপায়’- এ দুয়ের মাঝে যােগসূত্র স্থাপন করে। "Economics is the science which studies human behaviour as a relationship between ends and some means which have alternative uses."- Lionell Robbins, 2nd ed., 1935: 16) |




রবিন্সের অর্থনীতি সংক্রান্ত সংজ্ঞার অন্তর্গত বিষয় বা বৈশিষ্ট্য কি কি?(What are the main themes or characteristics of L.Robbin’s definition of economics?)


অধ্যাপক রবিন্সের সংজ্ঞায় নিম্নের বৈশিষ্ট্যগুলাে প্রতিফলিত হয়:

(১) লক্ষ্য আর উপায়-এ দুয়ের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন; অর্থনীতিতে লক্ষ্য বলতে মানুষের অভাব পূরণকে বুঝানাে হয় , আর সম্পদের প্রাপ্যতা ও প্রয়ােগ হল মাধ্যম যার মাধ্যমে সেই অভাব পূরণ করা যায়। রবিন্সের সংজ্ঞায় উদ্দেশ্য ও উপায়, এ দুয়ের মধ্যে যেগসূত্র স্থাপন করে অর্থনীতি।


(২) অভাবের অসীমতা: মানুষের অভাব বিচিত্র এবং অসংখ্য। অভাবের শিকল কেবলই প্রসারিত হয়। তবে সেই অসংখ্য অভাবের মধ্যে কাঁটছাট তাকে করতে হয়। কোন অভাব পূরণ জরুরী, সেগুলাে আগে স্থির করে নেওয়ার প্রয়ােজন হয়। এ বিষয়ের প্রতিফলন ঘটে রবিন্সের সংজ্ঞায় ।


(৩) পছন্দ বা নির্বাচনের সমস্যা: রবিন্সের সংজ্ঞায় অসীম অভাব ও সম্পদের স্বল্পতা থেকে পছন্দ বা নির্বাচনের প্রয়ােজনীয়তা উপলব্ধি করা যায়। অভাবের মধ্যে যেমন বাছাই করতে হয়, তেমনি আবার সম্পদের বিকল্প ব্যবহারের প্রসঙ্গটি গুরুত্ব পায়। তাই অর্থনীতি পছন্দের বিজ্ঞান হিসাবে চিহ্নিত হয়।


(৪) সম্পদের স্বল্পতা: প্রয়ােজনের তুলনায় সম্পদের তথা দ্রব্য ও সেবার স্বল্পতা অস্বীকার করা যায় না। অভাব পূরণের উদ্দেশ্যে সম্পদ স্বল্প বলেই অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দেয় । অর্থনৈতিক সমস্যার উৎস নিহিত আছে রবিন্সের সংজ্ঞায় ।


(৫) মিতব্যয়িতা ও সংরক্ষণের তাগিদ উপলব্ধি; সম্পদ সীমিত বলে তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে মিতব্যয়ি হতে হয় এবং প্রয়ােজনে সম্পদ সংরক্ষণের প্রশ্ন উঠতে পারে। রবিন্সের সংজ্ঞা থেকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার প্রয়ােজনীয়তাও ফুটে উঠে।


(৬) সুযােগ ব্যয়: সীমিত সম্পদের বন্টন প্রক্রিয়া থেকে এবং অভাবে মধ্যে নির্বাচন করতে গিয়ে একটি পাওয়ার জন্য আরেকটি ছাড়াতে হয়। আর তা থেকে সুযােগ ব্যয় ধারনার উৎপত্তি ঘটে। এভাবে রবিন্সের সংজ্ঞায় সুযােগ ব্যয় ধারণা অন্তনিহিত থাকে।


রবিন্সের অর্থনীতি সংক্রান্ত সংজ্ঞার গুনাবলী বা সুবিধা কি কি?(What are the merits or advantages of Robbin’s definition of economics?)


রবিন্সের অর্থনীতি সংক্রান্ত সংজ্ঞার গুনাবলী বা সুবিধা:

(১) স্বল্পতার বাস্তবতা স্বীকৃত: সম্পদ, দ্রব্য ও সেবা সবই প্রয়ােজনের তুলনায় স্বল্প। এ স্বল্পতাকে স্বীকার করে বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া যখন পরিচালিত হয়, তখন তা অধিক বাস্তবসম্মত হয়।


(২) অধিক বিজ্ঞানসম্মত: মানবীয় আচরণকে যখন সম্পদের অপ্রতুলতার গন্ডীতে আবদ্ধ করা হয়, তখন বিশ্লেষণ অধিকতর বিজ্ঞানসম্মত হয়ে ওঠে। কারণ এ সংজ্ঞায় অর্থনীতির সীমানা টেনে দেওয়া হয়।


(৩) অনির্দিষ্ট বা লক্ষ্যহীন যাত্রা থেকে সরে এসে অর্থনীতির সঠিক পথচলা: কল্যাণ বিষয়টি মনােগত এবং বিতর্কিত। তাই মার্শালের সংজ্ঞার কারণে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে মতভিন্নতা চরমে উঠার আশংকা দেখা দেয়। বিচার বুদ্ধির মূল্যায়ন (value judgement) নিয়ে মতভেদ থাকা স্বাভাবিক। কাজেই রবিন্স সেই মতভেদের আশংকা দূর করে বাস্তব বিষয়কে সম্মুখে এনে ইতিবাচক অর্থনীতির গুরুত্বকে বাড়িয়ে দিয়েছেন।


(৪) সর্বজনীন প্রয়ােগযােগ্যতা (universal application): রবিন্সের সংজ্ঞার সার্বিক প্রয়ােগযােগ্যতা বেশি। কারণ তা ব্যক্তি, গ্রুপ, সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্ব সব কিছুতেই সমভাবে প্রযােজ্য। সম্পদের স্বল্পতা সকলের জন্য সত্য এবং পছন্দ ও নির্বাচনের প্রয়ােজনীয়তাকেও সবাই স্বীকার করে নেয়। এ কারণে এ সংজ্ঞার প্রয়ােগযােগ্যতা বেশি।


(৫) পরিকল্পনার স্বীকৃতি: ব্যক্তি, পরিবার ও রাষ্ট্র সবার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে। সেই লক্ষ্য পূরণে সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে পরিকিল্পিত উপায়ে সবাইকে পছন্দ ও নির্বাচনের কাজটি সারতে হয়। আর এভাবেই পরিকল্পনার গুরুত্বকে রবিন্সের সংজ্ঞায় তুলে ধরা হয়েছে।


(৬) অর্থনৈতিক সমস্যার যৌক্তিক ব্যাখ্যা; অর্থনৈতিক সমস্যা কেন দেখা দেয়, এ প্রশ্নের উত্তর নিহিত আছে রবিন্সের সংজ্ঞায়। প্রয়ােজন তথা চাহিদা তুলনায় জোগান স্বল্প থাকায় সমস্যা দেখা দেয়। এ বিষয়টি রবিন্স যৌক্তিক ভাবে সবার সামনে তুলে ধরেছেন।


রবিন্সের অর্থনীতি সংক্রান্ত সংজ্ঞার সমালােচনা। ক্রটিগুলাে কি কি?(What are the criticisms/ defects of the Robbin’s definition of economics?)


অধ্যাপক রবিন্সের স্বল্পতাভিত্তিক অর্থনীতির সংজ্ঞা অনেকের কাছে গ্রহণযােগ্য হলেও, তার সমালােচনাও

হয়েছে যথেষ্ট।


১. অতি প্রসারিত সংজ্ঞা: অর্থনীতির পরিধিকে এ সংজ্ঞার মাধ্যমে এতটাই প্রসারিত করা হয়েছে যেখানে পথভ্রষ্ট হওয়ার আশংকা থাকে।


২.অর্থনীতি অর্থহীনতায় পরিণত: রবিন্সের চিন্তাধারা অনুসারে বিভিন্ন উদ্দেশ্যের মধ্যে অবস্থানরত অর্থনীতি যদি নিরপেক্ষ (neutral between ends) হয়, তবে তা একটি অর্থহীন বিষয়ে পরিণত হবে। তখন বাস্তবতার সাথে তার কোন সঙ্গতি থাকবে না।


৩. অতিমাত্রায় বিজ্ঞান বিধায় মানবীয় উপাদানের অস্বীকৃতি: রবিন্সের সংজ্ঞায় বিজ্ঞানভিত্তিক পর্যালােচনাকে | বেশি গুরুত্ব দেওয়ায়, মানবীয় গুনাবলীসহ বিভিন্ন উপাদান এ সংজ্ঞার আওতার বাইরে থেকে যায়।


৪. কেবলই অবরােহ পদ্ধতি (deductive method): এল. রবিন্স তাঁর সংজ্ঞায় ও তার প্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে কেবল অবরােহ পদ্ধতি প্রয়ােগ করতে প্রয়াস পান। অথচ আরােহ(inductive method) পদ্ধতি এবং ইতিহাসভিত্তিক (historical method)পদ্ধতির গুরুত্ব কম নয়।


৫. বাস্তব প্রয়ােগযােগ্যতহীন: অর্থনীতিকে স্বল্পতার ভিত্তিতে সংজ্ঞায়িত করা হলে অনেক সময় বিষয়টি ‘বিশুদ্ধ বিজ্ঞান হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বিজ্ঞানে এমন অনেক তত্ত্ব আছে, যা কেবল তত্ত্ব হিসাবে প্রণয়ন করা হয়, কিন্তু বাস্তবে প্রয়ােগ করা যায় না।


৬. অর্থনৈতিক সমস্যার উৎস কেবল স্বল্পতা বা দুষ্প্রাপ্যতা নয়: কেবল স্বল্পতা বা দুগ্ৰাপ্যতা থেকে অর্থনৈতিক সমস্যা সৃষ্টি হয় না। সম্পদের প্রাচুর্য থেকেও সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।


৭. স্থবির ও অপর্যাপ্ত সংজ্ঞা: রবিন্সের সংজ্ঞাকে অনেক সময় স্থবির ও অপর্যাপ্ত বলে সমালােচনা করা হয়। স্থিতীয় অর্থনীতিতে এই সংজ্ঞাটি প্রযােজ্য হলেও গতিশীল অর্থনীতিতে তা প্রয়ােগযােগ্য হয় না।


মার্শাল ও রবিন্স প্রদত্ত অর্থনীতি সংক্রান্ত সংজ্ঞার মধ্যে মিল/ সাদৃশ্য কি কি?(What are the similarities between the definitions of economics given by Marshall and Robbins?)


মার্শাল ও রবিন্স প্রদত্ত সংজ্ঞার মধ্যে মিল/ সাদৃশ্য নিম্নরূপ:

(১) মানুষ সংক্রান্ত আলােকপাত (focus on man): উভয় সংজ্ঞাতে মানুষ নিয়ে তথা মানুষের আচরণ,

অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও লক্ষ্য নিয়ে পর্যালােচনা করা হয় ।


(২) মানুষের যুক্তিশীল আচরণ (Rational behaviour of man): উভয় সংজ্ঞাতে মানুষের যুক্তিবাদী আচরণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মার্শালের সংজ্ঞায় ভােক্তা, উৎপাদকসহ সমাজের সবার কল্যাণ সর্বোচ্চকরণের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। রবিন্সও উল্লেখ করেন যে, যুক্তিশীল মানুষ স্বল্প সম্পদকে সঠিক ক্ষেত্র নির্বাচন করে এমনভাবে প্রয়ােগ করে যাতে তার সন্তুষ্টি সর্বোচ্চ হয়।


(৩) অর্থনীতির বিজ্ঞানময়তা (Economics as a science): মার্শালের সংজ্ঞায় অর্থনীতি একটি নীতিবাচক বিজ্ঞান আর রবিন্সের সংজ্ঞায় অর্থনীতি ইতিবাচক বা বাস্তব বিজ্ঞান হিসাবে চিতি । তবে দুটি সংজ্ঞার মধ্যে মিল হল উভয় সংজ্ঞাতে অর্থনীতি যে বিজ্ঞান এ বিষয়ে তাদের দ্বিমত নেই।


(৪) বস্তুগত বা সম্পদভিত্তিক কল্যাণ ও সম্পদের স্বল্পতা’ -এ দুটি বিষয় অনেকটা সমার্থক('wealth based welfare' and 'resorce scarcity' more or less similar): মার্শালের সংজ্ঞায় কল্যাণ বিষয়টি বস্তুগত সম্পদের সাথে জড়িত। রবিন্স কল্যাণ অর্জনকে মানুষ কর্তৃক স্বল্প সম্পদের প্রায়ােগিক দক্ষতা তথা মানুষের অর্থনৈতিক আচরণের সাথে জড়িত করেছেন। উভয়ের অন্তর্নিহিত বক্তব্য একই।


মার্শাল ও রবিন্স প্রদত্ত অর্থনীতি সংক্রান্ত সংজ্ঞার মধ্যে অমিল/বৈসাদৃশ্যগুলাে কি কি? (What are the differences /dissimilarities between the definitions of economics given by Marshall and Robbins?)


মার্শাল ও রবিন্স প্রদত্ত অর্থনীতি সংক্রান্ত সংজ্ঞার মধ্যে অমিল/বৈসাদৃশ্যগুলাে নিম্নরূপ:

(১) ইতিবাচক ও নীতিবাচক বিজ্ঞান (positive and normative science):মার্শালের সংজ্ঞায় কল্যাণ বিষয় গুরুত্ব পায়। আর তা নীতিবাচক বিষয়। কিন্তু রবিন্সের সংজ্ঞায় বস্তুগত সম্পদের বিষয় প্রাধান্য পায়। সম্পদের স্বল্পতা একটি বাস্তব বিষয়। তার প্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণও বাস্তব বা ইতিবাচক বিষয়।


(২) বিশুদ্ধ প্রায়ােগিক বিজ্ঞান (Social science and pure applied science): মার্শালের সংজ্ঞানুসারে অর্থনীতি সমাজ বিজ্ঞানরূপে চিহ্নিত হয়। সমাজে ন্যায়ের প্রশ্ন সেই সংজ্ঞায় স্থান পায়। অপরদিকে, অধ্যাপক রবিন্স অর্থনীতিকে একটি বিশুদ্ধ বাস্তব বিজ্ঞান বলে অভিহিত করেন।


(৩) অর্থনৈতিক ও অ-অর্থনৈতিক কাজ (Economic and non-economic activities): মার্শালের সংজ্ঞানুসারে অর্থনৈতিক কাজ বলতে কল্যাণ অর্জণের বস্তুগত দ্রব্য সংশ্লিষ্ট কাজকে বুঝানাে হয়। অপরদিকে রবিন্সের সংজ্ঞায় বলা হয় যে, মানুষের সব কাজই অর্থনৈতিক।


(৪) শ্রেণী বিভাজনকারী ও বিশ্লেষণধর্মী (classificatory and analytical): মার্শালের সংজ্ঞায় মানুষের কাজগুলােকে সাধারণ ও বিশেষ(ordinary and special), বস্তুগত ও অবস্তুগত (material and non-material) এবং কল্যাণধর্মী ও কল্যাণ ধর্মী নয় (welfare and non-welfare) এমন বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত করা হয়। কিন্তু রবিন্সের সংজ্ঞা কাজ- বিভাজনকারী না হয়ে বিশ্লেষণধর্মী বলে বিবেচিত হয়।


(৫) তত্ত্বীয় ও বাস্তব (theoretical and practical): মার্শালের সংজ্ঞায় অর্থনৈতিক কল্যাণ প্রসঙ্গ স্থান পায়, যা অনেকটা তত্ত্বীয় বিষয়। কিন্তু রবিন্সের সংজ্ঞায় সম্পদ প্রয়ােগ কৌশল স্থান পায়। কাজেই এ সংজ্ঞাটি প্রযুক্তিগত (technical) ও বাস্তব।


(৬) প্রয়ােগযােগ্যতার প্রকৃতি (nature of applicability): মার্শালের সংজ্ঞা পুঁজিবাদী মুদ্রাভিত্তিক অর্থনীতিতে প্রয়ােগযােগ্য বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু রবিন্সের সংজ্ঞা সব ধরণের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় প্রয়ােগযােগ্য।


মার্শাল ও রবিন্স প্রদত্ত অর্থনীতি সংক্রান্ত সংজ্ঞা দু’টির তুলনা কর। (Make a comparative analysis of the definitions of economics given by Marshall and Robbins)


মানবীয় কল্যাণ নাকি সম্পদের স্বল্পতার প্রেক্ষিতে অর্থনীতিকে বিবেচনা-এ দুটি ভাবনার মধ্যে কোনটি তােমার কাছে বেশি গ্রহণযােগ্য?]


১. মার্শালের সংজ্ঞায় বস্তুগত কল্যাণের উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু রবিন্সের সংজ্ঞায় অসীম অভাব ও সীমাবদ্ধ সম্পদ ব্যবহারের মধ্যে মানবীয় আচরণ প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।


২. মার্শালের সংজ্ঞা থেকে বস্তুগত ও অবস্তুগত কল্যাণের মধ্যে প্রভেদ করা হয়, যা বাস্তবসম্মত নয়। অপরদিকে, অধ্যাপক রবিন্স অথনৈতিক কল্যাণের উপর গুরুত্ব না দিয়ে অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও যৌক্তিক বিষয়ের উপর জোর দেন।


৩. মার্শালের সংজ্ঞার প্রকৃতি অনুধাবন করলে তাকে অতি প্রসারিত সংজ্ঞা বলা চলে। অপরদিকে, রবিন্সের সংজ্ঞা একটি নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে অর্থনীতিকে আবদ্ধ করে রেখেছে।


এল. রবিন্সের অর্থনীতি সংক্রান্ত সংজ্ঞাটি কেন অধিক গ্রহণযােগ্য?(Why the definition of economics provided by L.Robbins is widely accepted?)


মার্শালের সংজ্ঞা থেকে কল্যাণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। কিন্তু কল্যাণ ধারণা subjective তথা মনােগত। বস্তুগত দ্রব্য বা সম্পদ সামগ্রী তথা সম্পদ বাড়ালে সুখ ও কল্যাণ বাড়বে, এ কথাটি অভিজ্ঞতালব্ধ তথ্যাবলীর দ্বারা প্রমাণিত হয় না। রবিন্সের সংজ্ঞায় অসীম অভাব ও সম্পদ অপর্যাপ্ততাকে মেনে নিয়ে পছন্দ বা নির্বাচন এর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রবিন্সের সংজ্ঞায় আর্থিক মিতব্যয়িতা এবং তৃপ্তি সর্বোচ্চকরণ -এ দু’য়ের সমন্বয় প্রয়াস নিহিত আছে। রবিন্সের সংজ্ঞা কেবল স্বল্পতার সমস্যা নিয়ে জড়িত বলা হলেও তাই বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদ মনে করেন, রবিন্সের সংজ্ঞা তুলনামূলকভাবে বেশি গ্রহণযােগ্য।


অর্থনীতি সংক্রান্ত রবিন্সের সংজ্ঞার সমর্থনে আরও কোন সংজ্ঞা উল্লেখ করতে পার কি?(Can you site any other definition supporting L. Robbin’s definition of economics?)


রবিন্সের সংজ্ঞার সমর্থনে সংজ্ঞা: Stonier and Hague, "Economics is fundamentally a study of scarcity and the problems which gives rise scarcity."


কতিপয় প্রশ্নের অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর(Shortest answer to few questions):

১। অর্থনীতির সর্বাধিক জনপ্রিয় / বহুল ব্যবহৃত সংজ্ঞাটি কে প্রদান করেছেন? উ: লায়ােনেল সি. রবিন্স ।


২। এল রবিন্স কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন? উ: লন্ডন স্কুল অব ইকনােমিক্স (LSE)এর অধ্যাপক।


৩। অর্থনীতি বিষয়ক কোন সংজ্ঞায় সম্পদের স্বল্পতা প্রসঙ্গ গুরুত্ব পায়? উ: অধ্যাপক এল রবিন্সের সংজ্ঞায় ।


৪। স্বল্পতার দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থনীতির সংজ্ঞা মূলত: কে প্রদান করেছেন? উ: অধ্যাপক লিওনেল সি. রবিন্স(Lionel C.Robbins)


ধন্যবাদ

মনতোষ চক্রবর্তী


উৎস-



721 views0 comments

Recent Posts

See All

Comments


bottom of page