top of page
Search
  • Writer's pictureProf Manotosh Chakravarty

Trevithick's Locomotive- a Pioneer to Industrial Revolution

ইতিহাসের পাতা ধরে অর্থনীতির একটি ছোট্ট কাহিনী-

‘একটি ব্যর্থ উদ্ভাবন অথচ স্মরণীয়,

একটি বিষাদ মৃত্যু, অথচ অমরত্ব’

-মনতোষ চক্রবর্তী




Trevithick উদ্ভাবিত রেল ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ)





Richard Trevithick(1771-1833)



Richard Trevithick একজন খনি-প্রকৌশলী (mining engineer) এবং রেলওয়ে লোকোমোটিভ (রেল ইঞ্জিন) এর আবিষ্কারক/উদ্ভাবক । তিনি ছিলেন ইংল্যান্ডের কর্নওয়ালের এর বাসিন্দা। বিশ্বে প্রথম ছোট , হালকা কিন্তু উচ্চ চাপ সম্পন্ন স্টিম ইঞ্জিন উদ্ভাবন তিনি করেন, যা রেল ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) চালনার প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচিত হয়। Richard Trevithick ১৮০০ এর প্রথম ভাগে বিশ্বে প্রথম স্টিম লোকোমোটিভ চালু করার চেষ্টা করেন।





রাস্তায় চলাচলের জন্য স্টিম চালিত যান

[Steam road vehicle-Trevithick’s London Steam Carriage, 1803]

তিনি একটি ক্ষুদ্রাকৃতির (মডেল) রেল ইঞ্জিন নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট পরিচালনা করেন। ফুল সাইজ মডেল এর আগে তিনি ছোট আকারের ইঞ্জিন তৈরি করে নিয়ে চালিয়ে দেখান জনসমক্ষে। ১৮০৪ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি Trevithick এর স্টিম ইঞ্জিন একটি ট্রেনকে 10 মাইল অর্থাৎ 16 কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ট্রেন চালানোর জন্য সাউথ ওয়েলসের tramway-কে সেখানে ব্যবহার করা হয়েছিল।







Trevithick স্থির / অনড় বা স্টেশনারি স্টিম ইঞ্জিন কে চলমান বা মুভিং ইঞ্জিনে রূপান্তর করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি একটি সার্কুলার ট্রাক (চক্রাকার রেল) লন্ডনের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে স্থাপন করেন। সেখানে তিনি যাত্রী (প্যাসেঞ্জের) নিয়ে রেল ভ্রমণের নমুনা জনসমক্ষে প্রদর্শনের উদ্যোগ নেন, যার নামকরণ হয়েছিল “স্টিম সার্কাস” । তৎকালে ঘোড়ায় টানা গাড়ির বেশ প্রচলন ছিল। তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন যে, এই ঘোড়ায় টানা গাড়ির চাইতে ট্রেনে যাতায়াত সহজ ও দূষণমুক্ত।



Trevithik’s ‘Steam Circus’



পরীক্ষামূলক ট্রেনটিকে ঘন্টায় 5 কিলোমিটার বেগে চালিত করাও সম্ভব হয়েছিল। তবে পরীক্ষার কাজটি পূর্ণ সফলতা পায়নি । কারণ যে লোহা দিয়ে রেলপথ নির্মিত হয়েছিল, সেই রেললাইন ভেঙে গিয়েছিল পরীক্ষামূলক প্রদর্শনের সময়। Trevithick নতুনভাবে তার ডিজাইন করলেন। তিনি নতুন রূপে যে লোকোমোটিভ উপস্থাপন করেন, তা ঘণ্টায় ১২ মাইল অথবা 19 কিলোমিটার দৌড়াতে পারবে বলে তিনি ঘোষণা করেছিলেন । কিন্তু দুর্ভাগ্য যে , প্রদর্শনকালে রেললাইনটি আবারো ভেঙে যায়। রেল লাইন দুর্বলতা(ভঙ্গুরতা) ও রেল- বিষয়ে মানুষের আগ্রহের অভাব লক্ষ্য করে হতাশ হয়ে Trevithick তাঁর এক্সপেরিমেন্ট বাতিল করেন। মানুষের কাছে ঘোড়ায় টানা গাড়ির তুলনায় রেলভ্রমণ অ -আরামপ্রদ , অথচ বেশি বয়বহুল বলে তৎকালে মনে হয়েছিল। তাই হতাশার মধ্যে দিয়ে Trevithick কর্তৃক রেলইঞ্জিন প্রকল্প পরিত্যক্ত হয়। রেলওয়ে লোকোমোটিভ সংক্রান্ত চারটি এক্সপেরিমেন্ট তিনি পরিচালনা করেছিলেন, চতুর্থবারের মতো ব্যর্থ হয়ে তিনি ক্ষান্ত হন ।



Trevithick রেলওয়ে লোকোমোটিভ এক্সপেরিমেন্ট বাতিল করেছিলেন ঠিকই , কিন্তু পরবর্তীকালে কিছু সংস্করণের মাধ্যমে তাঁর সেই উদ্ভাবিত স্টিম লোকমোটিভ বাস্তবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছিল । ১৮১২ তে ম্যাথু মুররে (Matthew Murray ) টুইন সিলিন্ডার স্টিম লোকোমোটিভ চালু করে ঘোড়ায় টানা ‘কয়লার ওয়াগন’ পদ্ধতির বিলুপ্তি সাধণ করেন। এরপর এসেছে ট্রেভিত্বিক-কে অনুসরণ করে George Stephenson এর The Rocket নামক রেল ইঞ্জিন। আপাত-ব্যর্থ হলেও Trevithick এর অবদান ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। রেলওয়ে হলো শিল্প বিপ্লবের আরেকটি পর্যায়, যা নিজ গতিবেগ বৃদ্ধির সাথে সাথে শিল্প -প্রসারতা, বাজার সম্প্রসারণ এর মাধ্যমে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির চাকাতেও গতি সঞ্চার করেছিল। আজও Trevithick স্মরণীয় হয়ে আছেন তাঁর এক্সপেরিমেন্ট ও গবেষণা কাজ পরিচালনার জন্য। তিনি হয়তো পূর্ণ সফলতা পাননি, কিন্তু তারই উদ্ভাবনকে পরিমার্জন করে পরবর্তীতে এসেছে George Stephenson এর The Rocket নামক রেল ইঞ্জিন[ যা নিয়ে পরবর্তী উদ্ভাবন কাহিনী প্রকাশ পাবে।]


একটি স্টিম লোকোমোটিভের নমুনা-দৃশ্য

ট্রেভিত্বিক-এর জীবনের শেষ পর্যায়

ট্রেভিত্বিক-এর জীবনের শেষ পর্যায়টি ছিল বিষাদের। একের পর এক ব্যর্থতায় ও ব্যবসায়িক অসাফল্যে কপর্দকহীন ট্রেভিত্বিক ডার্টফোর্ডে চাকুরী করা কালীন সময়ে নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হয়ে আত্মীয়হীন -বন্ধুহীন একাকী শয্যাশায়ী থেকে মৃত্যু বরন করেন। তার কজন সহকর্মী শেষে তাঁকে চাঁদা তুলে সমাধিস্থ করেন। তাঁর সমাধির কোনো চিহ্ন নেই । তবে শিল্প বিপ্লবের ভিত রচনায় উচ্চ চাপের স্টিম ব্যবহারের গুরুত্ব পরবর্তীতে উপলব্ধি করেছেন সবাই। তাই শিল্প বিপ্লবে রেল ইঞ্জিন সংক্রান্ত ট্রেভিত্বিক-এর অবদান মানুষ ভুলে যায়নি । Cornwall এর ক্যাম্বরণে পাবলিক লাইব্রেরির বাইরে-



দন্ডায়মান পাথরের ট্রেভিত্বিক ।


উল্লেখ্য: রেল ইঞ্জিন সংক্রান্ত Trevithick যে এক্সপেরিমেন্ট প্রয়োগ করতে চেয়েছিলেন, তার উৎস নিহিত ছিল Newcomen এর দি এটমোস্ফেরিক স্টিম ইঞ্জিন এর মধ্যে। Newcomen এর ‘দ্য এটমোসফেরিক ইঞ্জিন’[ যার ওপর ইতোমধ্যে লেখা প্রকাশ করেছি, ] এর মাধ্যমে খনি থেকে বাড়তি জল বের করে দেয়া এবং আবর্জনা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে উত্তোলন করা সম্ভব হয়েছিল । Newcomen এর স্টিম ইঞ্জিন এর উন্নত সংস্করণ বের করেছিলেন জেমস ওয়াট ১৭৬০ এর দশকে । তিনি এমনভাবে স্টিম ইঞ্জিন ডিজাইন করলেন, যাতে স্টিম ইঞ্জিনকে নানা কাজে ব্যবহার করা সম্ভব হয়। যেমন ভাবে বস্ত্র মিলে তার প্রয়োগ ঘটে, তেমনি আবার রেলওয়ে ইঞ্জিন বা জাহাজ চালানোর ক্ষেত্রেও তাকে ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছিল । এরই ধারাবাহিকতায় ট্রেভিত্বিক এর উদ্যোগ পরিচালিত হয়েছিল, যা আবার ক্রমাগত সংস্করণের মাধ্যমে শিল্প বিপ্লবের গতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয় ।

[এ কাহিনী থেকে আমরা উপলব্ধি করতে পারি - Trevithick এর উদ্ভাবন একটি ব্যর্থ প্রয়াস হলেও শিল্প বিপ্লবের ইতিহাসে তিনি কেন স্মরণীয় হয়ে আছেন।]


ফটো ও কৃতজ্ঞতা : Wikipedia



প্রফেসর মনতোষ চক্রবর্তী

Email: manotosh.chakravarty@gmail.com

14 views0 comments

Recent Posts

See All

Comments


bottom of page